আতঙ্কের সৃষ্টি! হামের ভ্যাকসিন নিয়ে ভুল ধারণা, বাড়ছে বিভ্রান্তি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হাম রোগের বিষয়ে ভুল ধারণা দ্রুত ছড়াচ্ছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হাম রোগ এবং এর প্রতিষেধক টিকা নিয়ে মিথ্যা তথ্যের শিকার হচ্ছেন।

এই পরিস্থিতি শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং হাম রোগের প্রাদুর্ভাব আরও বাড়িয়ে তুলছে।

নতুন জরিপ অনুযায়ী, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ধারণা, হামের এমএমআর (MMR – Measles, Mumps, Rubella) টিকা শিশুদের অটিজমের কারণ। এছাড়া, এক-তৃতীয়াংশ মানুষের ধারণা, হামের টিকা রোগটির চেয়ে বেশি বিপজ্জনক।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গত এক বছরে এই ভুল ধারণার বিস্তার দ্বিগুণ হয়েছে। জরিপে আরও দেখা যায়, প্রায় এক-পঞ্চমাংশ মানুষ মনে করেন ভিটামিন এ হাম প্রতিরোধ করতে পারে। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির পরিবারের সদস্য রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র (Robert F. Kennedy Jr.), যিনি দীর্ঘদিন ধরে হামের টিকার বিরোধিতা করে আসছেন, তিনিও বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের ভুল তথ্য প্রচার করেছেন। যদিও বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, টিকা এবং অটিজমের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।

এই ভুল ধারণাগুলোর কারণে অনেক অভিভাবক তাদের শিশুদের টিকা দিতে দ্বিধা বোধ করছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী অভিভাবকদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ হয়তো কোনো টিকা দেননি বা দেরিতে দিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে হাম রোগের বিস্তার আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে, চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৯০০ জনের বেশি হাম রোগী শনাক্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC) জানাচ্ছে, আক্রান্তদের ৯৭ শতাংশই টিকা গ্রহণ করেননি। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসাধারণের মধ্যে টিকার বিষয়ে ভুল ধারণা এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাম একটি মারাত্মক রোগ এবং এর বিরুদ্ধে টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। টিকার অপপ্রচার রোধ করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা দেখি, তবে এখানেও হাম একটি উদ্বেগের বিষয়। সরকার নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে এবং হাম নির্মূলে কাজ করছে।

তবে, এখানেও টিকার বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তাই, জনসচেতনতা তৈরি করা এবং সঠিক তথ্য প্রচার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *