মেলানিয়ার নীরব ক্ষমতা: ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কেমন আছেন তিনি?

হোয়াইট হাউসে মেলানিয়া ট্রাম্পের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম হলেও, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের মেয়াদে তাঁর প্রভাব ছিল বেশ গভীর। সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে শিশুদের রক্ষা করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে তাঁর আবেদন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

যদিও জনসম্মুখে তাঁর আনাগোনা সীমিত, তবুও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তিনি তাঁর মতামত দিয়েছেন এবং তাঁর স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন।

মেলানিয়া ট্রাম্প সাধারণত প্রকাশ্যে খুব একটা আসেন না। তাঁর স্বামী যখন আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন, তখনো তিনি সেখানে ছিলেন না। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানেও তাঁর দেখা মেলেনি।

আগের মেয়াদের তুলনায়, এই সময়ে তাঁর সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সংখ্যাও অনেক কম।

তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র মারফত জানা যায়, মেলানিয়া নিয়মিতভাবে তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, বিশেষ করে টেক্সট মেসেজ ও ফোনের মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে কথা হয়। তিনি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরও নিয়মিত অনুসরণ করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর মেলানিয়া ট্রাম্প কিছু বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।

উদাহরণস্বরূপ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ন্যাটোর মহাসচিবের সঙ্গে এক বৈঠকে মেলানিয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, “আমি ফার্স্ট লেডিকে বললাম, ‘জানেন তো, আজ ভ্লাদিমিরের সঙ্গে আমার চমৎকার কথা হল।’ তিনি বললেন, ‘ওহ, তাই নাকি? আবার একটি শহরে আঘাত হানা হয়েছে।

মেলানিয়া ট্রাম্প শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন। পুতিনের কাছে লেখা চিঠিতে তিনি যুদ্ধের শিকার শিশুদের “অন্ধকার” জীবনের কথা উল্লেখ করেন এবং রুশ প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তিনি তাদের জীবনে “সুরের হাসি” ফিরিয়ে আনতে পারেন।

যদিও চিঠিতে সরাসরি ইউক্রেনের কথা উল্লেখ করা হয়নি, তবে যুদ্ধের কারণে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় শিশু রাশিয়ার হাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মেলানিয়ার এই ধরনের পদক্ষেপ প্রমাণ করে, তিনি শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কতটা উদ্বিগ্ন। তিনি নিজেও একসময় তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ায় (বর্তমান স্লোভেনিয়া) বেড়ে উঠেছেন, যা একসময় রুশ প্রভাবের অধীনে ছিল।

হোয়াইট হাউসে মেলানিয়া ট্রাম্পের কর্মীর সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক কম। তাঁর অফিসে বর্তমানে তুলনামূলকভাবে কম কর্মী কাজ করেন।

আগের ফার্স্ট লেডিদের তুলনায় মেলানিয়ার এই সীমিত অংশগ্রহণ কিছুটা ভিন্নতা তৈরি করেছে। অনেকের মতে, তিনি তাঁর এই ভূমিকা বেছে নিয়েছেন।

তবে তাঁর এই নীরবতা সত্ত্বেও, তাঁর নেওয়া কিছু পদক্ষেপ এবং তাঁর দেওয়া কিছু মন্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *