বিশ্বের সেরা খাদ্য গন্তব্য হিসেবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ভ্রমণ সংস্থা ট্রাভেলব্যাগের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। সামাজিক মাধ্যম, ওপেনটেবল এবং গেট ইউর গাইড-এর তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা খাদ্যপ্রেমীদের জন্য আন্তর্জাতিক গন্তব্যগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে। যেখানে মেলবোর্ন শীর্ষস্থান অর্জন করেছে।
মেলবোর্নের এই সাফল্যের পেছনে মূল কারণ হলো এর বৈচিত্র্যময় খাদ্য সংস্কৃতি। এখানে একশটিরও বেশি ভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে, যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি রেস্টুরেন্টে পরিবেশন করা হয়। এই শহরে চাইনিজ এবং গ্রিক সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস উল্লেখযোগ্য হারে দেখা যায়, যা এখানকার খাদ্য সংস্কৃতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
মেলবোর্নের চায়নাটাউন, যা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এবং বৃহত্তম, ১৮৫০ এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখানকার প্রতিটি মানুষের নিজস্ব একটি প্রিয় ডাম্পলিং-এর দোকান আছে। এছাড়াও, গ্রিক সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো ‘জিম’স গ্রিক টেভার্ন’। যেখানে মেনু ছাড়াই আন্তরিক আতিথেয়তার সাথে খাবার পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও, ‘স্টালাকটাইটস’-এর মতো স্থানগুলোও গ্রিক সম্প্রদায়ের কাছে বিশেষ পরিচিত।
অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি মেলবোর্নের খাদ্যরসিকদের কাছে এক ভিন্ন স্বাদের জন্ম দেয়। এই শহরের ‘ফ্লাফি টর্পেডো’র মতো আইসক্রিম শপে ভেজিমাাইট-এর স্বাদযুক্ত আইসক্রিম পাওয়া যায়, যা এখানকার সংস্কৃতিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। শুধু তাই নয়, ‘এট্টা’র মতো রেস্টুরেন্টগুলো নিজেদের ‘মেলবার্নিয়ান’ হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করে, কারণ তাদের মেনু কোনো নির্দিষ্ট খাবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তারা স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে ঋতু অনুযায়ী খাবার পরিবেশন করে থাকে।
আপনি যদি থর্নবারিতে খাঁটি ইথিওপিয়ান খাবার অথবা কলিংউডে জাপানি বাজারের স্বাদ নিতে চান, তবে মেলবোর্ন আপনাকে ভিন্ন এক মহাদেশে নিয়ে যাবে। এখানে সবুজ ট্রাম এবং রঙিন মেনুগুলো যেন এক ভিন্ন জগৎ তৈরি করে। যেখানে রাস্তার পাশে তাজা সুশি পরিবেশন করা হয়, সকালের নাস্তা একটি জীবনযাত্রার অংশ, কফি যেন এক ধরণের ধর্ম এবং প্রতিটি খাবার একটি নতুন অভিজ্ঞতা।
মেলবোর্নের এই খাদ্য-বৈচিত্র্য শুধু একটি শহরের পরিচয় নয়, বরং বিভিন্ন সংস্কৃতির মিলনস্থল, যা খাদ্যপ্রেমীদের জন্য এক অসাধারণ আকর্ষণ।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল ব্যাগ