শেয়ার বাজারে আবার নতুন করে কিছু “মিম স্টক”-এর উত্থান দেখা যাচ্ছে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা দ্রুত লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হচ্ছেন।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর কোম্পানি কোহলস (Kohl’s) এবং অনলাইন-ভিত্তিক রিয়েল এস্টেট সংস্থা ওপেনডোর টেকনোলজিস (Opendoor Technologies)-এর শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই ধরনের শেয়ারগুলোর উত্থান, মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন কমিউনিটির আলোচনা-সমালোচনার ওপর নির্ভরশীল, যেখানে কোম্পানির আর্থিক পারফরম্যান্সের চেয়ে এই বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পায়।
“মিম স্টক” ধারণাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে ২০২১ সালে, যখন গেমস্টপ (GameStop) এবং এএমসি এন্টারটেইনমেন্টের (AMC Entertainment) মতো কোম্পানির শেয়ারের দামে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। এই স্টকগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনা এবং তাদের সম্মিলিত ক্রয় সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কোহলস-এর শেয়ারের দাম গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিটি বর্তমানে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, যার মধ্যে রয়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পরিবর্তন এবং দুর্বল বিক্রি।
এছাড়াও, ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এবং ওয়ালমার্ট ও অ্যামাজনের মতো বড় প্রতিযোগীদের সঙ্গে টিকে থাকতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। ওপেনডোর টেকনোলজিসের শেয়ারের দামও গত কয়েক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
যদিও এই কোম্পানি এখনো পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেনি, তবুও বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের “মিম স্টক”-এ বিনিয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কারণ, এদের দাম খুব দ্রুত বাড়ে এবং একইভাবে দ্রুত কমতেও পারে।
গেমস্টপের উদাহরণ থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এর শেয়ারের দাম পাঁচ ডলার থেকে বেড়ে ১২০ ডলারের বেশি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, সেই দাম ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
ব্ল্যাকবেরি (BlackBerry)-র শেয়ারও একই ধরনের উত্থান-পতন দেখেছে।
বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য, এই ধরনের বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে সচেতন থাকাটা জরুরি। যদিও আমাদের দেশের শেয়ার বাজারে এখনো “মিম স্টক”-এর ধারণা সেভাবে প্রভাব বিস্তার করেনি, তবে বিশ্ব বাজারের এই পরিবর্তনগুলো আমাদের বিনিয়োগের ধরন এবং ঝুঁকির বিষয়ে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ধরনের শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগ করার আগে বিনিয়োগকারীদের নিজেদের গবেষণা করা এবং বাজারের অস্থিরতা সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।
দ্রুত লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এতে লোকসানের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
তথ্য সূত্র: Associated Press