মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মেমোরিয়াল ডে: সেনাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর দিন।
প্রতি বছর মে মাসের শেষ সোমবার, যা সাধারণত মাসের ২৬ তারিখে পরে, এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিত হয় মেমোরিয়াল ডে। এটি শুধু একটি ছুটির দিন নয়, বরং এটি সেইসব বীর সেনা ও নারী সৈন্যদের প্রতি উৎসর্গীকৃত, যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন।
এই দিনটি শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের স্মরণ করার একটি বিশেষ মুহূর্ত।
মেমোরিয়াল ডে-র ধারণা আসে ‘ডেকোরেশন ডে’ থেকে। গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পরিবারগুলো তাঁদের স্বজনদের সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতেন। এই প্রথা থেকেই মেমোরিয়াল ডের জন্ম।
১৮৬৮ সালে, জেনারেল জন এ. লোগান নামক এক ব্যক্তি, যিনি ‘গ্র্যান্ড আর্মি অফ দ্য রিপাবলিক’-এর প্রধান ছিলেন, তিনি ৩০শে মে দিনটিকে মেমোরিয়াল ডে হিসেবে ঘোষণা করেন এবং এই দিনটি পালনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সময়ের সাথে সাথে, এই দিনটি জাতীয় স্বীকৃতি লাভ করে এবং অবশেষে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গৃহীত হয়।
মেমোরিয়াল ডে-র মূল তাৎপর্য হলো, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সৈন্যদের স্মরণ করা।
এই দিনে সৈন্যদের সমাধিস্থলে ফুল ও পতাকা দিয়ে সম্মান জানানো হয়। সরকারি ভবনগুলোতে অর্ধনমিত রাখা হয় জাতীয় পতাকা।
বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভে নিহত সৈন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং বিশেষ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এই দিনের সঙ্গে জড়িত আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হলো – ‘আর্মড ফোর্সেস ডে’ এবং ‘ভেটেরান্স ডে’।
‘আর্মড ফোর্সেস ডে’ পালন করা হয় মে মাসের তৃতীয় শনিবার, যেখানে কর্মরত সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানানো হয়। অন্যদিকে, ‘ভেটেরান্স ডে’ পালন করা হয় ১১ই নভেম্বর, যেখানে সকল প্রাক্তন সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মেমোরিয়াল ডে-তে ‘শুভ মেমোরিয়াল ডে’ বলার পরিবর্তে নিহত সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানানো উচিত।
এই দিনে শোক প্রকাশ এবং তাঁদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করাটাই মূল উদ্দেশ্য।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই দিনে নিহত সেনাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করা হয়।
অনেক সংগঠন আহত বা নিহত সৈনিকদের পরিবারকে সাহায্য করে। আপনিও যদি চান, তবে এমন কোনো সংস্থাকে অর্থ সাহায্য করতে পারেন, যা তাঁদের সহায়তা করে।
যেমন – ‘হোপ ফর দ্য ওয়ারিয়র্স’, ‘নেভি-মেরিন কর্পস রিলিফ সোসাইটি’, অথবা ‘হোমস ফর আওয়ার ট্রুপস’।
মেমোরিয়াল ডে-র মাধ্যমে, আমরা স্মরণ করি সেইসব সাহসী সৈন্যদের, যারা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের স্বাধীনতা ও শান্তির ভিত্তি স্থাপন করেছে। তাঁদের প্রতি সম্মান জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
তথ্য সূত্র: People