জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিয়েডরিশ মেরৎস ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউরোপের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মেরৎস এই প্রস্তাব দেন।
ইউরোপীয় ঐক্যের উপর জোর দিয়ে মেরৎস বলেন, ফ্রান্স ও জার্মানিকে অতীতের চেয়ে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা কেবল তখনই এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারব, যদি ফ্রান্স এবং জার্মানি অতীতের চেয়ে আরও বেশি কাছাকাছি আসে।” মেরৎস ও ম্যাক্রোঁ একটি নতুন ‘ফ্রাঙ্কো-জার্মান পদক্ষেপ’ নিতে সম্মত হয়েছেন।
আলোচনায় উঠে আসে, ফ্রাঙ্কো-জার্মান প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
মেরৎস জানান, ইউক্রেনকে সহায়তার ক্ষেত্রে তারা সমন্বয় বাড়াতে চান। একই সঙ্গে, প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা ও সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা আরও নিবিড় করা হবে।
নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নীতি সংক্রান্ত কৌশলগত বিষয়গুলোতেও নতুন সমাধান খোঁজা হবে।
বর্তমানে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ চলছে।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে ইউরোপে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে, মেরৎস এবং ম্যাক্রোঁ যৌথভাবে ‘লে ফিগারো’ পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন।
সেখানে তাঁরা ইউক্রেনে একটি “ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি” প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানান। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহায়তার পাশাপাশি শক্তিশালী নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রদানের উপর জোর দেন।
ম্যাক্রোঁ দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা সক্ষমতা তৈরি করার কথা বলেন।
জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে মেরৎসের মেয়াদ বেশ কঠিন ছিল।
বুন্দেসটাগে (জার্মান পার্লামেন্ট) চ্যান্সেলর নির্বাচনের জন্য তাঁকে দুই দফা ভোট করতে হয়েছিল, যা নজিরবিহীন।
এর মাধ্যমে তাঁর দলীয় জোট, সেন্টার-রাইট সিডিইউ/সিএসইউ এবং সেন্টার-লেফট এসপিডির মধ্যে বিভাজনও স্পষ্ট হয়েছিল।
তবে বর্তমানে মেরৎস এমন এক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যেখানে চ্যান্সেলারি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়—উভয়ই একই দলের হাতে।
যা জার্মানির পররাষ্ট্রনীতিতে ঐক্যের ইঙ্গিত দেয়।
তিনি পররাষ্ট্র, উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা নীতির মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর লক্ষ্যে চ্যান্সেলারিতে একটি জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বুধবার মেরৎস পোল্যান্ডে যান।
সেখানে তিনি জার্মান রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম জেডডিএফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি ম্যাক্রোঁ এবং পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের সঙ্গে মিলে অভিবাসন নীতি নিয়ে কাজ করতে চান।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা