মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মেটা’র বিরুদ্ধে এক বিরাট অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে তাদের ‘অবৈধভাবে’ একচেটিয়া বাজার তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে। ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) এই মামলাটি করেছে।
মেটা, যা আগে ফেসবুক নামে পরিচিত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তারা বছরের পর বছর ধরে ‘প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যকলাপের’ মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেছে।
মামলার ফলস্বরূপ যদি বিচারক সরকারের পক্ষে রায় দেন, তবে মেটাকে সম্ভবত তাদের অধীনস্থ দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, ইন্সটাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ বিক্রি করতে হতে পারে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্টদেরও সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।
এই মামলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামও, যিনি এই মামলার গতিপ্রকৃতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিট্রাস্ট আইন, যা মূলত বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রণীত, সেই আইনের অধীনে এই মামলাটি চলছে। কোনো কোম্পানি যদি বাজারের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে, যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তবে এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মেটা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অন্যান্য ছোট প্রতিদ্বন্দ্বীদের কিনে নিয়ে অথবা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বাজার থেকে সরিয়ে দিয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের সুযোগ সীমিত করে দিয়েছে।
এই মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক। ট্রাম্পের সময়েই মূলত মেটা’র বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল।
যদিও ট্রাম্প এবং মেটা’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গের মধ্যে ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে শোনা যায়, যা এই মামলার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। জাকারবার্গ বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
এমনকী, ট্রাম্পও বিচারকের সমালোচনা করেছেন, যিনি এই মামলার বিচার করছেন।
মেটা অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ-এর সঙ্গে টিকটক, ইউটিউব, এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলির তীব্র প্রতিযোগিতা রয়েছে।
তাদের মতে, নিয়ন্ত্রকদের উচিত একটি আমেরিকান কোম্পানিকে ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা।
এই মামলার রায় শুধু মেটা’র জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং প্রযুক্তি ব্যবসার ভবিষ্যৎকেও প্রভাবিত করবে।
যদি মেটা’কে তাদের দুটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম বিক্রি করতে হয়, তবে এর ফলে ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে এবং বাজারে আরও বেশি প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে।
তবে, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা এই মামলার ভবিষ্যৎকে আরও জটিল করে তুলেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন