ইনস্টাগ্রামে কিশোরদের লাইভ বন্ধ করছে মেটা, চাঞ্চল্যকর পদক্ষেপ!

মেটা’র পদক্ষেপ: কিশোর-কিশোরীদের জন্য ইনস্টাগ্রামে লাইভ-স্ট্রিমিং বন্ধ।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিশুদের নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যবহারকারীদের সুরক্ষায় মেটা (সাবেক ফেসবুক) এবার তাদের প্ল্যাটফর্মগুলোতে নতুন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

এর অংশ হিসেবে, ইনস্টাগ্রামে ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য লাইভ-স্ট্রিমিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যদি না তাদের অভিভাবকের অনুমতি থাকে।

শুধু তাই নয়, সরাসরি বার্তা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে নগ্নতা সম্পর্কিত ছবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঝাপসা করার যে ব্যবস্থা রয়েছে, সেটি বন্ধ করতেও অভিভাবকদের অনুমতি লাগবে।

মেটা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফেসবুক এবং মেসেঞ্জারেও খুব শীঘ্রই এই নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে।

এই নতুন নিয়মগুলি মূলত ‘টিন অ্যাকাউন্ট’ নামক একটি ব্যবস্থার অংশ।

গত বছরই এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, যেখানে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য কিছু বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।

  • অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের অ্যাপ ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ,
  • নির্দিষ্ট সময়ে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার বন্ধ করা এবং তাদের সন্তানের মেসেজ আদান-প্রদান নজরে রাখার সুযোগ।

বর্তমানে, এই ‘টিন অ্যাকাউন্ট’ ব্যবস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডাতে চালু করা হয়েছে।

এখানে ১৬ বছরের কম বয়সীদের সেটিংস পরিবর্তন করতে অভিভাবকদের অনুমতি লাগবে।

তবে, ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীরা চাইলে নিজেরাই সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবে।

মেটা’র হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫ কোটি ৪০ লক্ষ কম বয়সী ব্যবহারকারী ইনস্টাগ্রামের ‘টিন অ্যাকাউন্ট’ ব্যবহার করছে।

এদের মধ্যে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের ৯০ শতাংশের বেশি ডিফল্ট সেটিংস-এর বিধিনিষেধগুলো মেনে চলে।

এই পদক্ষেপের পেছনে যুক্তরাজ্যের অনলাইন নিরাপত্তা আইনও (Online Safety Act) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।

এই আইনের অধীনে, ফেসবুক, গুগল, টুইটার (বর্তমানে ‘এক্স’) এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোকে শিশু যৌন নির্যাতন, প্রতারণা ও সন্ত্রাসবাদের মতো অবৈধ কন্টেন্ট শনাক্ত করতে এবং তা অপসারণ করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই আইন শিশুদের ক্ষতিকর উপাদান, যেমন আত্মহত্যা বা আত্ম-ক্ষতি সম্পর্কিত বিষয়বস্তু থেকেও রক্ষা করার কথা বলছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সচেতনতা এবং প্ল্যাটফর্মগুলোর সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।

অভিভাবকদের জন্য উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা গেলে, তারা ডিজিটাল জগৎ থেকে উপকৃত হতে পারবে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *