ফেসবুকের নীতি পরিবর্তনে মেটা’র দ্রুত সিদ্ধান্ত, সমালোচনায় বোর্ড!

সামাজিক মাধ্যম কোম্পানি মেটা’র (Meta) বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ নীতিমালায় পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এর তদারকি বোর্ড।

বোর্ডের মতে, এই পরিবর্তনগুলো ‘হুট করে’ আনা হয়েছে এবং এর ফলে মানবাধিকারের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা বিবেচনা করা হয়নি।

বিশেষ করে বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে এর ফল মারাত্মক হতে পারে।

জানা যায়, গত গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের দাঙ্গার সময় মুসলিম ও অভিবাসী-বিরোধী কিছু পোস্ট সরিয়ে দিতে দেরি হওয়ায় সমালোচিত হয়েছিল ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা।

এরপর তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাক্ট-চেকিং বা তথ্য যাচাইয়ের পরিমাণ কমানো, প্ল্যাটফর্মে ‘সেন্সরশিপ’ হ্রাস এবং আরও বেশি রাজনৈতিক বিষয়বস্তু প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয়।

মেটার এই পদক্ষেপের ওপর নিজেদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তদারকি বোর্ড বলেছে, কোম্পানিটি খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তাদের উচিত ছিল মানবাধিকারের ওপর এর প্রভাবগুলো আগে বিবেচনা করা।

বোর্ডের মতে, মেটাকে জাতিসংঘের মানবাধিকার নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং নীতি পরিবর্তনের প্রভাবগুলো খতিয়ে দেখতে হবে।

বোর্ড বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে, মেটা যদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নীতি লঙ্ঘনের ঘটনা শনাক্ত করার ওপর নির্ভরতা কমায়, তাহলে বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে এর ভিন্ন ফল হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, গত বছর যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্ট হামলার পর সেখানে দাঙ্গা ছড়িয়ে পরেছিল।

এই সময় বেশ কিছু পোস্টে মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য এবং দাঙ্গার প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছিল।

বোর্ড বলেছে, এই পোস্টগুলো সহিংসতা উস্কে দিয়েছে এবং দ্রুত সরিয়ে ফেলা উচিত ছিল।

বোর্ড আরও জানায়, মেটা’র নতুন নীতিমালায় এখন ব্যবহারকারীরা তাদের ধর্ম, লিঙ্গ, জাতিগত পরিচয় বা অভিবাসন অবস্থার ভিত্তিতে কারো বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে পারবে।

যেমন, কোনো একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে ‘হত্যা’ করার মতো কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে, মেটা এখনও ফ্যাক্ট-চেকারদের ব্যবহার করছে।

বোর্ড সুপারিশ করেছে, মেটা যেন কমিউনিটি নোটস-এর কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা করে।

কারণ, ব্যবহারকারীরাই এখন প্ল্যাটফর্মে বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

মেটার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা নিয়মিতভাবে তদারকি বোর্ডের মতো বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মতামত নেয় এবং বোর্ডের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।

গত গ্রীষ্মের ঘটনার পর তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছিল এবং কয়েক হাজার আপত্তিকর পোস্ট সরিয়ে দিয়েছিল।

মেটা আরও জানিয়েছে, বোর্ডের সুপারিশের বিষয়ে তারা ৬০ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *