বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা চলছে, সেই সময়ে প্রযুক্তি বিশ্বে কর্মীদের আকৃষ্ট করতে বড় অঙ্কের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে মেটা।
ওপেনএআই (OpenAI)-এর কর্মীদের দলে টানতে ১০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ‘জয়েনিং বোনাস’-এর প্রস্তাব দিয়েছে মেটা, এমনটাই অভিযোগ করেছেন ওপেনএআই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) স্যাম অল্টম্যান।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে অল্টম্যান জানান, মেটা তার কোম্পানির অনেক কর্মীকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অফার করেছে।
যদিও এখন পর্যন্ত তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
ওপেনএআই-এর সেরা কর্মীরা মেটার প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
অন্যদিকে, মেটা এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে, অল্টম্যান মেটাকে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “মেটার বর্তমান এআই প্রচেষ্টা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল দেয়নি।
আমি তাদের আগ্রাসী মনোভাবকে সম্মান করি, তবে আমি মনে করি তারা উদ্ভাবনে তেমন একটা ভালো নয়।”
জানা গেছে, মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ব্যক্তিগতভাবে একটি নতুন ‘সুপার ইন্টেলিজেন্স’ (Superintelligence) তৈরির জন্য কর্মী নিয়োগ করছেন, যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
ব্লুমবার্গ এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাকারবার্গ এআই খাতে মেটার দুর্বল পারফরম্যান্সে হতাশ হয়ে কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করছেন এবং মেনলো পার্কের সদর দফতরের বিন্যাসও পরিবর্তন করেছেন, যাতে নতুন দলটি তার অফিসের কাছাকাছি থাকতে পারে।
গত সপ্তাহে, জাকারবার্গের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য স্কেল এআই (Scale AI)-এ ১৪.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করা হয়।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে স্কেল এআই-এর কিছু কর্মী মেটাতে যোগ দেবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, গত কয়েক বছরে জাকারবার্গ এআইকে মেটার প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন।
ওপেনএআই-এর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে আসা অগ্রগতির কারণে তিনি এই বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
ওপেনএআই ইতিমধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে।
প্রযুক্তি বিশ্বে বর্তমানে এআই নিয়ে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা।
গুগল, মাইক্রোসফট, এবং অ্যামাজনের মতো বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও এই দৌড়ে টিকে থাকতে বিশাল বিনিয়োগ করছে।
এই পরিস্থিতিতে, কর্মীদের আকৃষ্ট করতে মেটার এমন বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করার বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের এই অগ্রগতি বাংলাদেশের জন্য বিশাল সুযোগ নিয়ে আসতে পারে।
দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তিপ্রেমীরা যদি এই বিষয়ে আরও বেশি আগ্রহী হন, তাহলে বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাত বিশ্ব দরবারে আরও শক্তিশালী হতে পারবে।
এআই-এর এই দৌড়ে কে জয়ী হবে, তা বলা কঠিন।
তবে, কর্মীদের আকৃষ্ট করার জন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে, তা নিঃসন্দেহে প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
তথ্যসূত্র: সিএনএন