ফেসবুক-এর মূল প্রতিষ্ঠান মেটা’র প্রাক্তন এক কর্মকর্তার লেখা একটি বিস্ফোরক বই প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বইটির নাম “কেয়ারলেস পিপল” (Careless People), যেখানে মেটা’র শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই বইয়ে মেটা’র প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের কিছু গোপন ও বিতর্কিত দিক তুলে ধরা হয়েছে। প্রকাশের প্রথম সপ্তাহেই বইটির ৬০ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে এবং অ্যামাজনের বেস্ট সেলারের তালিকায় শীর্ষ দশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।
বইটিতে সারাহ উইন-উইলিয়ামস, যিনি একসময় মেটা’র বৈশ্বিক নীতি বিভাগের পরিচালক ছিলেন, তিনি জাকারবার্গ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিষ্ঠুর আচরণের কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও, জাকারবার্গের চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে।
তবে মেটা কর্তৃপক্ষ এই বইটিকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। তারা উইন-উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে।
বইটি প্রকাশের পরপরই মেটা কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়। আদালতের একজন মধ্যস্থতাকারী উইন-উইলিয়ামসকে বইটির প্রচার করা বা মেটা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে ফ্ল্যাটারন বুকস, যারা এই বইটি প্রকাশ করেছে, তারা এখনো বইটির প্রকাশনা ও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
মেটা এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় এবং উইন-উইলিয়ামসের বইটিকে মিথ্যা ও মানহানিকর হিসেবে উল্লেখ করেছে। অন্যদিকে, ফ্ল্যাটারন বুকস কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা বইটির বিষয়বস্তু ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করার পরেই প্রকাশ করেছে এবং তারা লেখকের পাশে আছে।
ফ্ল্যাটারন বুকস আরও জানায়, মেটা কর্তৃপক্ষের এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের লেখককে চুপ করানোর চেষ্টা।
বইটি প্রকাশের আগে মেটা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল এবং সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছিল। তবে অনেক সমালোচক ও সাংবাদিক মনে করছেন, মেটা কর্তৃপক্ষের এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের ভাবমূর্তিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এই ঘটনার মাধ্যমে কর্পোরেট জগৎ ও গোপনীয়তার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সেই সঙ্গে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষমতা এবং এর প্রভাব নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস