মেক্সিকোতে মাদক পাচার দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকোতে সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাম তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মেক্সিকোর সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকার করে শেইনবাম জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতি তারা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই জটিল, যা বাণিজ্য, অভিবাসন এবং নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে জড়িত। ট্রাম্প এর আগে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শেইনবাম স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকলেও, তাদের সেনাবাহিনী মেক্সিকোর ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারবে না। ট্রাম্প অবশ্য শেইনবামকে মাদক কারবারিদের “ভয়ে ভীত” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে মেক্সিকো মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন এবং মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও, মেক্সিকোতে মাদক ব্যবসার মূল সমস্যা সমাধানে সামরিক পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তাদের মতে, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছাই এই সমস্যার সমাধানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
মেক্সিকোর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের নিরাপত্তা কৌশল থেকে সরে এসে শেইনবাম এখন সরাসরি মাদকবিরোধী অভিযানে জোর দিচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে, সীমান্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন শীর্ষ মাদক কারবারিকে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি মেক্সিকোর জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একতরফা সামরিক পদক্ষেপ মেক্সিকোর সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী হবে। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে মেক্সিকোকে সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান