মেক্সিকোর নতুন প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাম, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির সম্ভাব্য প্রভাব থেকে দেশকে বাঁচাতে কৌশলগতভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মেক্সিকোর গাড়ি ও যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে তিনি শান্ত ও আলোচনা-নির্ভর পথ বেছে নিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ‘ঠান্ডা মাথার’ কূটনীতি সম্ভবত মেক্সিকোর জন্য সঠিক পদক্ষেপ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনা দেখা গিয়েছিল। এবারও, শুল্কের হুমকি আসার পর, শেইনবাম সরাসরি বিতর্কে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।
অর্থনীতিবিদদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ মেক্সিকোর অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
২০২৪ সালে, মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১৮২.৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের গাড়ি ও যন্ত্রাংশ আমদানি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, নতুন শুল্ক আরোপ হলে তা মেক্সিকোর অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব ফেলবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
কিন্তু শেইনবাম পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছেন।
শেইনবাম এর এই কৌশল কানাডার থেকে ভিন্ন। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে সরাসরি বিতর্কে জড়িয়েছিল, কিন্তু মেক্সিকো সেই পথে হাঁটেনি।
এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মেক্সিকো আলোচনার মাধ্যমে তাদের অবস্থান আরও ভালোভাবে তুলে ধরতে চাইছে। মেক্সিকোর কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কমানো বা একেবারে তুলে দেওয়ার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মেক্সিকোর অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। তাদের মূল লক্ষ্য হলো, উৎপাদনকারীদের ওপর একাধিক শুল্কের বোঝা চাপানো বন্ধ করা।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও শেইনবাম এর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন অনেকে। এমনকি, ডোনাল্ড ট্রাম্পও তার আলোচনার দক্ষতার স্বীকৃতি দিয়েছেন।
তবে, শেইনবামের এই কৌশল শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। মেক্সিকোর অর্থনীতির জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাবেক মেক্সিকান অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী, ইল্ডেফনসো গুয়াজার্দো মনে করেন, যদি বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে তা মেক্সিকোর উৎপাদন খাতের জন্য মারাত্মক আঘাত হবে। এর ফলে দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা আরও গভীর হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন