১১ বছরের মেয়ের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য: মায়ের সাহসী পদক্ষেপ!

শিরোনাম: মেয়ের আত্মমর্যাদা: অপ্রত্যাশিত মন্তব্যের মুখে কীভাবে জবাব দিতে হয়, মা শেখালেন

ছোট্ট মেয়েটি তখন এগারো বছর বয়সী, হাসিখুশি আর প্রাণবন্ত। উৎসুক চোখে চারিদিকে তাকিয়ে থাকা, বন্ধুদের সাথে গল্প করা—এসবের মাঝেই সে বেড়ে উঠছিল। একদিন পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে এক বয়স্ক ভদ্রলোক তার দিকে তাকিয়ে এমন একটা মন্তব্য করলেন, যা শুনে মেয়েটি অস্বস্তিতে পড়ল।

মায়ের মনে হলো, যেন একটা ধাক্কা লাগল। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি বুঝলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে আসা অন্যান্য অতিথিদের সাথে যখন স্বাভাবিক কথাবার্তা চলছিল, ঠিক তখনই সেই অপ্রত্যাশিত মন্তব্য। ভদ্রলোক হয়তো স্বাভাবিকভাবেই কথাটি বলেছিলেন, কিন্তু ১১ বছরের মেয়ের চোখেমুখে ফুটে ওঠা বিব্রতভাব দেখে মায়ের মনটা খারাপ হয়ে গেল।

তিনি অনুভব করলেন, মেয়েটি যেন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। মা হিসেবে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই বুঝেছিলেন, এই ধরনের মন্তব্য শিশুদের মনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

ঘটনাটি মাকে অনেক কথা ভাবিয়ে তোলে। তিনি উপলব্ধি করলেন, সমাজে মেয়েদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এখনো অনেক ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ। অনেক সময়, তাদের শারীরিক সৌন্দর্যের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়, যা তাদের আত্ম-অনুসন্ধানের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি বুঝতে পারলেন, মেয়েকে শুধু সুন্দর হিসেবে দেখাটাই যথেষ্ট নয়, বরং তার ভেতরের আত্মমর্যাদাকে জাগিয়ে তুলতে হবে।

এরপরে, মা তার মেয়ের সাথে খোলামেলা আলোচনা শুরু করেন। তিনি নিজের জীবনের কিছু অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার কথা জানান, যখন কিছু মানুষ তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিল। তিনি বুঝিয়েছিলেন, কীভাবে সমাজের কিছু মানুষ মেয়েদের দুর্বল ভাবতে অভ্যস্ত।

তাই, কোনো পরিস্থিতিতে অস্বস্তি হলে, চুপ করে না থেকে প্রতিবাদ করাটা জরুরি।

মা মেয়েকে শেখালেন, এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজের অধিকার রক্ষা করতে হয়। কাউকে ভালো না লাগলে, সরাসরি ‘না’ বলার সাহস রাখতে হবে। কারও কোনো কথা যদি অপমানজনক মনে হয়, তবে দ্বিধা না করে তার প্রতিবাদ করতে হবে।

মা বুঝিয়েছিলেন, অন্যের ভালো লাগানোর চেয়ে নিজের ভালো থাকাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এই ঘটনার পরে, মা এবং মেয়ে দুজনেই নিজেদের ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা একসঙ্গে সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন, যা মেয়েটিকে আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করেছে।

মা তাকে শিখিয়েছেন, নিজের সম্মান রক্ষা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।

আজকাল সমাজে নারীদের সম্মান ও অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ছে। মা তার মেয়েকে আত্মমর্যাদাবোধের গুরুত্ব শিখিয়েছেন এবং বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনো পরিস্থিতিতেই নিজেকে ছোটো ভাবা উচিত নয়।

একজন মা হিসেবে, তিনি চান তার মেয়ে আত্মবিশ্বাসী হোক, নিজের ভালো-মন্দ বুঝুক, এবং সমাজের সব ধরনের খারাপ ব্যবহারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখুক।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *