২০১৪ সালে ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় রাশিয়ার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের বিমান চলাচল সংস্থা। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (International Civil Aviation Organisation – ICAO)-এর মতে, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ১৭ ভূপাতিত করার পেছনে রাশিয়ার হাত ছিল। এই ঘটনায় নিহত হয় বিমানের সব যাত্রী ও ক্রুসহ মোট ২৯৮ জন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করতে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডস। বিমানটিতে ৩৮ জন অস্ট্রেলীয় এবং ১৯৬ জন ডাচ নাগরিক ছিলেন। উভয় দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে রাশিয়া বরাবরই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আইসিএও-এর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডকাম্প। তিনি বলেন, “এই রায় সত্য প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংও এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং দ্রুত ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের জন্য আইসিএও-কে অনুরোধ করেছেন।
২০১৪ সালের ১৭ই জুলাই, আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরগামী মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের আকাশে বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হয়, রুশ নির্মিত একটি ‘বুক’ (BUK) ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি ভূপাতিত হয়।
সেই সময় ওই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লড়াই চলছিল। ঘটনার পর বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দাবি করেছিল, ইউক্রেনীয় একটি যুদ্ধবিমান এই হামলা চালিয়েছে। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ঘটনার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছিলেন।
২০২২ সালে, একটি ডাচ আদালত এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এদের মধ্যে দুইজন রাশিয়ান নাগরিক ছিল, যাদেরকে রাশিয়া হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি ইয়েবিগা এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “সত্যের জয় হবেই।”
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা