শিকাগোর প্রাক্তন প্রভাবশালী রাজনীতিক, হাউজ স্পিকার মাইকেল ম্যাডিগানকে দুর্নীতির দায়ে সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত এই রায় ঘোষণা করে, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ষড়যন্ত্র এবং আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল।
৮৩ বছর বয়সী ম্যাডিগান, যিনি ১৯৭১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে দায়িত্ব পালন করেছেন, বিচারকের এই রায়ের পাশাপাশি আড়াই মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা দিতেও বাধ্য হয়েছেন। আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ম্যাডিগান দীর্ঘদিন ধরে নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সুবিধা অর্জন করেছেন।
ফেব্রুয়ারি মাসে, একটি দীর্ঘ শুনানির পর আদালত ম্যাডিগানকে দোষী সাব্যস্ত করে। অভিযোগ ছিল, তিনি একটি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজশে কাজ করেছেন এবং এর মাধ্যমে নিজের সহযোগী ও বন্ধুদের আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। এই কাজের বিনিময়ে তারা সামান্য কাজ করতেন অথবা কোনো কাজই করতেন না।
আদালতে বিচারক জন রবার্ট ব্লেকি, ম্যাডিগানের সাজা ঘোষণার সময় বলেন, “আমি সত্যিই দুঃখিত যে ইলিনয় রাজ্যের মানুষকে এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হলো।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি চেষ্টা করেছি রাজ্যের মানুষের জন্য ভালো কিছু করার, কিন্তু আমি নিখুঁত নই।
আদালতের শুনানিতে জানা যায়, ম্যাডিগান শিকাগো সিটি কাউন্সিলের একজন সদস্যের সঙ্গে মিলিত হয়ে আইনি কাজের প্রস্তাব তৈরি করেন। এর বিনিময়ে তিনি ওই কর্মকর্তাকে একটি সরকারি পদে নিয়োগ পেতে সহায়তা করেন। বিচারক ম্যাডিগানের আত্মপক্ষ সমর্থনে দেওয়া বক্তব্যকে মিথ্যাচার ও এড়িয়ে যাওয়া হিসেবে বর্ণনা করেন।
এই মামলার শুনানিতে ম্যাডিগানের আইনজীবীরা তাঁর কম সাজার আবেদন করেছিলেন। তবে বিচারক জানান, ফেডারেল আইন অনুযায়ী, এই ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১০৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
ম্যাডিগানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে ছিল, তিনি সরকারি পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সময়ে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেছেন।
বিভিন্ন সূত্রে খবর, আগামী ১৩ই অক্টোবর থেকে ম্যাডিগানকে কারাগারে যেতে হবে। দুর্নীতি দমন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে এই রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: পিপলস