ফরাসি আলোকচিত্রী মিশেল খারুবি’র ক্যামেরায় প্যারিসের বুকে এক অন্যরকম ছবি। তাঁর তোলা ছবিগুলি যেন এক একটি ‘নগর-নাটক’, যেখানে শহরের পথচলতি মানুষজনই প্রধান চরিত্র।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে খারুবি তাঁর ছবি তোলার কৌশল নিয়ে কথা বলেছেন, যা শহর জীবনের প্রতি তাঁর গভীর অনুভূতির প্রতিফলন।
প্যারিসের ১৩ নম্বর অ্যারোন্ডিসমেন্টের লেস অলিম্পিয়াদে ছবিটি তুলেছিলেন খারুবি।
ছবি তোলার স্থানটি তাঁর কাছে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং শহরের দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দী করাই তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য।
খারুবি’র মতে, ছবি তোলার জন্য অত্যাধুনিক ক্যামেরার থেকে বেশি জরুরি হল একজন ফটোগ্রাফারের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি।
তিনি বলেন, “আমি বাস্তবধর্মী বা তথ্যচিত্রের মতো ছবি তুলতে আগ্রহী নই। বরং, আমি চেষ্টা করি শহরের কিছু বিশেষ মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দী করতে।
মিশেল খারুবি’র ছবির ভাষ্য অনুযায়ী, শহর যেন এক বিশাল মঞ্চ, আর পথচারীরা সেই নাটকের অভিনেতা।
ছবি তোলার সময় তিনি একটি নির্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করেন, সঠিক মুহূর্তের জন্য।
তাঁর ক্যামেরার লেন্স সব সময় প্রস্তুত থাকে, যখনই কোনো আকর্ষণীয় চরিত্র অথবা ঘটনার জন্ম হয়, তখনই তিনি তা ফ্রেমবন্দী করেন।
ছবি তোলার পর, তিনি সম্পাদনার মাধ্যমে ছবির বিষয়বস্তুকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন।
তাঁর ভাষায়, “আমি একজন পরিচালকের মতো, যিনি ছবি তোলার পরে সম্পাদনার মাধ্যমে দৃশ্যটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলি।
স্মার্টফোন নাকি অন্য কোনো ক্যামেরা, এই বিষয়ে খারুবির তেমন কোনো আগ্রহ নেই।
তাঁর কাছে মূল বিষয় হল, একজন মানুষের জগৎকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেই গল্প ক্যামেরার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা।
তাঁর মতে, ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রটি গৌণ, আসল বিষয় হল একজন ফটোগ্রাফারের নিজস্ব শৈলী।
তিনি বিশ্বাস করেন, একটি ভালো ছবি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে, এমনকি তাদের মনে কৌতূহল জাগাতে পারে এবং বিশ্বের প্রতি নতুন ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করে।
মিশেল খারুবি’র এই ‘নগর-নাটক’-এর ধারণা আমাদের দেশের শহরগুলির ছবি তোলার ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম কিংবা অন্যান্য শহরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা দৈনন্দিন জীবনের ছবিগুলোও তো এক একটি জীবন্ত নাটক।
তথ্য সূত্র: The Guardian