মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, শুল্ক বৃদ্ধি, তেলের দাম কমে যাওয়া এবং বিদেশি সাহায্য হ্রাসসহ বিভিন্ন কারণে এই অঞ্চলের দেশগুলো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আইএমএফ এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ ডলারের বেশি থেকে কমে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে ৬৫ থেকে ৬৯ ডলারে দাঁড়াতে পারে। এর ফলে জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশগুলো বাজারের অস্থিরতার ঝুঁকিতে পড়বে।
আইএমএফের মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক পরিচালক জিহাদ আজুর দুবাইয়ে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিতে পারে। এর ফলে দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
আজুর আরও বলেন, বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়াও একটি উদ্বেগের কারণ। বিশেষ করে, যারা দুর্বল অর্থনীতির দেশ, তাদের জন্য এটি নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে। তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রদান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২.৬ শতাংশ। যেখানে গত বছর এই হার ছিল ১.৮ শতাংশ। তবে বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা এই পূর্বাভাসের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণ করতে সক্ষম হচ্ছে। মহামারি-পরবর্তী সময়ে তাদের জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ পর্যন্ত এফডিআই বেড়েছে। কিন্তু অন্যান্য দেশগুলোতে এই প্রবাহ কমে গেছে।
সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে এবং লেবাননের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছে আইএমএফ। সিরিয়ার অর্থনীতির পুনরুদ্ধার একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া উল্লেখ করে আজুর বলেন, এর জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার। একই সঙ্গে অবকাঠামো নির্মাণ, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং শরণার্থী সমস্যা সমাধানে একটি সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও, কাঠামোগত সংস্কার এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে এই অঞ্চলের দেশগুলো তাদের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারে বলে মনে করে আইএমএফ।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস