মিলি সাইরাস: নতুন অ্যালবামে সঙ্গীতের ‘চিকিৎসা’?
পপ তারকা মিলি সাইরাস তার নবম অ্যালবাম ‘সামথিং বিউটিফুল’ নিয়ে হাজির হয়েছেন। শুধু গানই নয়, এর সাথে রয়েছে একটি চলচ্চিত্রও।
সাইরাস এই অ্যালবামটিকে অসুস্থ সংস্কৃতির ‘চিকিৎসা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যেখানে সঙ্গীতের মাধ্যমে ‘আরোগ্যকারী শব্দ’ ব্যবহার করা হয়েছে, যা শরীরের কম্পাঙ্ক পরিবর্তন করে ভিন্ন স্তরে নিয়ে যাবে। ১৯৮২ সালের অ্যালান পার্কারের সিনেমা ‘দ্য ওয়াল’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে এই ‘পপ অপেরা’, যেখানে পোশাক এবং গ্ল্যামারের ছোঁয়া বেশি রয়েছে।
নতুনত্বের খোঁজে মিলি
যদিও সাইরাসের আগের অ্যালবাম ‘ফ্লাওয়ার্স’ ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশিবার শোনা গানের তালিকায় ছিল, তবুও তার এই নতুন কাজের ধারণা শুনে সম্ভবত তার রেকর্ড লেবেলের কর্মকর্তারা একটু দ্বিধা বোধ করেছিলেন।
কারণ, সাইরাসের আগে এমন কিছু কাজ রয়েছে যা অপ্রত্যাশিত ছিল। যেমন, ‘ব্যাঙ্গার্জ’ অ্যালবামটির পর তিনি ‘মিলি সাইরাস অ্যান্ড হার ডেড পেটজ’ প্রকাশ করেন, যেখানে গানের মধ্যে ছিল অনেক নিরীক্ষামূলক উপাদান।
এমনকি, রেকর্ড লেবেলের পরামর্শ সত্ত্বেও তিনি অ্যালবামটি আরও দীর্ঘ করেন, যেখানে তিব্বতি শব্দযন্ত্রের শব্দ যুক্ত করা হয়।
অতীতেও এমন হয়েছে যে সাইরাসের ঘোষণা করা কিছু কাজ প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। ২০১৭ সালের ‘ইয়ঙ্গার নাও’ অ্যালবামটি কান্ট্রি ঘরানার ছিল না, আবার ২০২০ সালের ‘প্লাস্টিক হার্টস’ ছিল নতুন ধারার রক ঘরানার অ্যালবাম, যেখানে জোয়ান জেট এবং বিলি আইডল-এর মতো শিল্পীরা কাজ করেছিলেন।
তবে, স্টাইলের দিক থেকে অ্যালবামটি ছিল বেশ ভিন্ন।
চলচ্চিত্র: গল্পের অভাব
নতুন চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও একই রকম কিছু দেখা যায়। সিনেমাটি ‘দ্য ওয়াল’ থেকে অনুপ্রাণিত হলেও, এর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন।
সিনেমার কোনো নির্দিষ্ট গল্প নেই। মূলত, এটি বিভিন্ন গানের ভিডিওর সমষ্টি, যেগুলোকে তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে।
মাঝে মাঝে কিছু সংলাপও শোনা যায়। সিনেমার দৃশ্যগুলোতে মিলি সাইরাসকে বিভিন্ন পোশাকে দেখা যায়।
অ্যালবাম: শোনা ও উপলব্ধির ভিন্নতা
অ্যালবামের শুরুতে একটি ক্লাসিক্যাল ঘরানার গান শোনা যায়, যেখানে কণ্ঠ এবং বাদ্যযন্ত্রের মিশ্রণ রয়েছে। এরপর গানের ধারা পরিবর্তিত হতে থাকে।
‘এন্ড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর মতো গানে ১৯৮০ দশকের পপ-এর ঝলক দেখা যায়। ‘ইজি লাভার’-এর হালকা ডিস্কো সুর এবং বিভিন্ন ব্যান্ডের গানও রয়েছে।
অ্যালবামের দ্বিতীয় অংশে নাচের উপযোগী গানগুলোর প্রাধান্য দেখা যায়। এখানে ফরাসি গান, আবার ‘আব্বা’ ব্যান্ডের গানের সুরের প্রভাব রয়েছে।
এছাড়া, ১৯৮০ দশকের গে ক্লাবগুলোতে জনপ্রিয় হওয়া ইলেক্ট্রনিক সঙ্গীতের ছোঁয়াও পাওয়া যায়।
গানগুলো তৈরি হয়েছে দারুণভাবে।
তবে, সাইরাসের এই নতুন অ্যালবামে এমন কোনো গান নেই যা শ্রোতাদের মন জয় করে নেবে।
‘এন্ড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘এভরি গার্ল ইউ’ভ এভার লাভড’-এর মতো গানগুলো ভালো হলেও, সেগুলোকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রাখা কঠিন।
সব মিলিয়ে, মিলি সাইরাসের এই অ্যালবামটি তার আগের কাজগুলোর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন।
তবে, যারা পরীক্ষামূলক গান শুনতে পছন্দ করেন, তাদের ভালো লাগতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান