মিল্লি ব্রাইট: সমাজের জন্য ফুটবল এবং নিজের উপলব্ধির কথা
ফুটবল খেলার জগতে, খেলোয়াড়রা শুধু মাঠের পারফর্ম্যান্সের জন্য পরিচিতি পান না, বরং সমাজের প্রতি তাদের অবদানও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। চেলসি ও ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার, মিল্লি ব্রাইট তেমনই একজন, যিনি খেলার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা বলেন।
সম্প্রতি, তিনি নিজের অনুভূতি এবং ফুটবল ফাউন্ডেশনের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন।
মিল্লি ব্রাইট মনে করেন, খেলাধুলা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম যা সমাজের দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্য করতে পারে। তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন তরুণ প্রজন্মের প্রতি, যাদের মধ্যে খেলাধুলার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস এবং নতুন স্বপ্ন জাগানো সম্ভব।
তাঁর মতে, সমাজের প্রতিটি মানুষেরই নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাওয়া উচিত।
নিজের এলাকার মেয়েদের ফুটবল খেলার সুযোগ করে দিতে মিল্লি ব্রাইট কিলামার্শ জুনিয়র্স ক্লাবে ‘মিল্লি ব্রাইট পিচ’ তৈরি করেছেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ানো এবং তাদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
ব্রাইট মনে করেন, এই ধরনের উদ্যোগের ফলে খেলোয়াড়রা তাদের এলাকার মানুষের কাছে আরও বেশি পরিচিত হবে এবং এলাকার তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে।
ইংল্যান্ড দলের সাফল্যের পেছনে নারীদের কঠোর পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে ব্রাইট বলেন, “আমরা আমাদের সাফল্যের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। কঠোর অনুশীলন, একাগ্রতা এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে যেকোনো কিছুই জয় করা সম্ভব।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ফুটবল খেলার মাধ্যমে শুধু শারীরিক সক্ষমতাই বাড়ে না, বরং এটি মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সম্পর্ক গঠনেও সাহায্য করে।”
সম্প্রতি, তাঁর সতীর্থ লুসি ব্রোঞ্জ, যিনি এডিএইচডি (অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার) এবং অটিজম নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন, সেই প্রসঙ্গে ব্রাইট বলেন, “লুসির এই পদক্ষেপ অন্যদের জন্য সাহস যোগাবে।
সমাজে এমন অনেকেই আছেন যারা হয়তো নিজেদের দুর্বলতা নিয়ে দ্বিধা বোধ করেন, কিন্তু লুসির এই কথা তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।”
ব্রাইট আরও মনে করেন, প্রত্যেকেরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এই ভিন্নতাই তাদের শক্তি।
ফুটবল ফাউন্ডেশনের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ব্রাইট বলেন, “ফাউন্ডেশন এমন একটি পরিবেশ তৈরি করছে যেখানে শিশুরা নিজেদের ইচ্ছামতো খেলাধুলা করতে পারে। খেলাধুলা শুধু শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে না, বরং সামাজিক সম্পর্ক তৈরি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সহায়ক।”
বর্তমানে, খেলোয়াড়দের প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা বাড়ছে, যা তাদের জন্য ভালো কিছু করার সুযোগ তৈরি করেছে। তবে, মাঠে ও মাঠের বাইরে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও জরুরি।
ব্রাইট মনে করেন, খেলোয়াড়দের সুস্থতা এবং তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়াটাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মিল্লি ব্রাইটের মতে, ফুটবল একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত করতে পারে। তাঁর স্বপ্ন, খেলাধুলার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে সবাই একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হবে এবং নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টা করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান