শিরোনাম: মাইনক্রাফট সিনেমা: আসল আকর্ষণ কি নির্মাতাদের থেকে দূরে থাকা ফ্যানদের হাতে?
ভিডিও গেম ‘মাইনক্রাফট’ (Minecraft) এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত গেমটি বিশ্বজুড়ে ৩০০ কোটির বেশি ডলার আয় করেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকার সমান! শুধু তাই নয়, গেমটির সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বিশাল, যা প্রায় ২০ কোটির কাছাকাছি।
গেমটির জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি যে, এর ভিত্তিতে সিনেমা তৈরির ঘোষণা আসতেই ভক্তদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল বিপুল আগ্রহ। তবে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমার ট্রেলার সেই আগ্রহে যেন জল ঢেলে দিয়েছে।
গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘এ মাইনক্রাফট মুভি’র (A Minecraft Movie) ট্রেলারটি প্রকাশের পরই এর বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই এর দৃশ্য ও চরিত্রায়ণ নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
বিশেষ করে, সিনেমার ভিজ্যুয়াল স্টাইল এবং চরিত্রগুলোর উপস্থাপনা, যা গেমের মূল ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন গেমাররা। অনেক দর্শক একে ‘নির্মম’ এবং ‘আত্মা-বিহীন’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
গেমটির মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর ব্লক-সদৃশ জগৎ এবং স্বতন্ত্র ভিজ্যুয়াল স্টাইল। কিন্তু ট্রেলারে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়।
সিনেমায় মানুষের উপস্থিতি এবং তাদের ভিন্ন ধরনের সাজসজ্জা অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে। জেসন মোমোয়ার মতো জনপ্রিয় অভিনেতাকে এখানে দেখা গেলেও, তাঁর সাজসজ্জা নিয়েও অনেকে সমালোচনা করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক মাইনক্রাফট ভক্ত, সিনেমার ধারণার সঙ্গে নিজেদের পছন্দের মিল খুঁজে পেতে, নিজেরাই সিনেমা বানানোর চেষ্টা করছেন। ইউটিউবে এরই মধ্যে এমন অনেক ফ্যান-নির্মিত ট্রেলার দেখা যাচ্ছে, যেখানে গেমের আসল রূপ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
কেউ কেউ মূল গেমের স্টাইল অনুসরণ করে সিনেমা বানানোর চেষ্টা করছেন, আবার কেউ গেমের বিভিন্ন দিক নিয়ে নিজেদের মতো করে গল্প বলছেন। এই ধরনের প্রয়াসগুলো প্রমাণ করে, মাইনক্রাফট শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি বিশাল কমিউনিটি, যেখানে সকলে মিলেমিশে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে।
এই সিনেমা নির্মাণের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। বিভিন্ন সময়ে নির্মাতারা এটি বানানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে, জ্যারেড হেসের পরিচালনায় সিনেমাটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
তবে সিনেমাটি কতটা দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে, তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, মাইনক্রাফটের মতো একটি জনপ্রিয় গেমের সিনেমা বানাতে হলে, এর প্রতি ভালোবাসা এবং গেমের আসল রূপ সম্পর্কে গভীর ধারণা থাকা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইনক্রাফটের মতো একটি উন্মুক্ত জগৎ-নির্ভর খেলার সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে, নির্মাতাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ, গেমাররা তাঁদের পছন্দের বিষয়টির সঙ্গে কোনো আপস চায় না।
সম্ভবত, ভবিষ্যতে যদি ভক্তরাই এই সিনেমা নির্মাণের দায়িত্ব পান, তবে তাঁরা আরও ভালোভাবে তাঁদের ভালোবাসার প্রতি সুবিচার করতে পারবেন। ‘এ মাইনক্রাফট মুভি’ আগামী ৩ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়া এবং ৪ এপ্রিল যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান