“Minecraft”-এর জাদু: সিনেমা হলে উন্মাদনা আর ইন্টারনেটের প্রভাব। সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া “এ মাইনক্রাফট মুভি” নিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
এই সিনেমার দর্শকদের মধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিম ছড়িয়ে পড়ার কারণে, সিনেমা হলের পরিবেশ এখন অন্যরকম রূপ নিয়েছে।
অনেক দর্শক সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ সংলাপগুলো একসঙ্গে চিৎকার করে বলছে, গানগুলো গাইছে, এমনকি কিছু দৃশ্যে তারা এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়ছে যে, হল কর্তৃপক্ষকে তাদের সরিয়ে দিতে হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সিনেমা হলের এই দৃশ্যগুলো এখন আলোচনার বিষয়। বিশেষ করে, মাইনক্রাফট-এর একটি বিশেষ চরিত্র, “জোম্বি চিকেন জকি” পর্দায় আসার পরে দর্শকদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
কেউ কেউ তাদের পানীয় ও পপকর্ন ছুড়ে মারছিল, যা অনেক ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।
আসলে, এই সিনেমার মূল আকর্ষণ তৈরি হয়েছে ইন্টারনেটের মিম সংস্কৃতি থেকে। মিম হলো, হাসির ছবি বা ভিডিও, যা দ্রুত অনলাইনে ছড়িয়ে পরে।
“এ মাইনক্রাফট মুভি” এর ক্ষেত্রে, যারা এই মিমগুলো সম্পর্কে জানে, তারা যেন অন্যদের চেয়ে নিজেদের আলাদা প্রমাণ করতে চাইছে।
আর্থাৎ অনেকটা এমন, “আমি বিষয়টি বুঝি, তোমরাও নিশ্চয়ই বোঝো”।
তবে, সবার জন্য এই অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। যাদের মধ্যে অটিজম রয়েছে, তাদের জন্য হলের এই হই-হুল্লোড় কিছুটা ভীতিজনক ছিল।
সিনেমার এই ধরনের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে মার্ভেল সিনেমা “অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম” বা “স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম”-এর দৃশ্যের তুলনা করা যেতে পারে, যেখানে সিনেমার ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দর্শকরা আনন্দ প্রকাশ করেছিল।
কিন্তু “এ মাইনক্রাফট মুভি”-এর ক্ষেত্রে, দর্শকদের প্রতিক্রিয়াগুলো মূলত এসেছে মিম থেকে, যা অনেকের কাছে হয়তো পরিষ্কার নয়।
এই সিনেমাটি দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে, কারণ এটি তাদের পছন্দের একটি জগৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে। যারা গেমটি ভালোবাসে, তাদের জন্য সিনেমাটি যেন এক দারুণ উদযাপন।
সিনেমার নির্মাতারাও বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন এবং চেষ্টা করছেন কীভাবে এই মিম-এর জাদু ধরে রাখা যায়।
সিনেমার জগতে দর্শকদের এই নতুন আচরণ বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্ভবত, ভবিষ্যতে সিনেমা হলগুলো বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারে – যেমন, অটিজম-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা অথবা ফ্যান নাইট-এর আয়োজন করা।
বর্তমানে, সিনেমা হলগুলোতে দর্শকদের মধ্যে সিনেমার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে, যা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। সিনেমা নির্মাতারাও এখন চেষ্টা করছেন, কীভাবে তরুণ দর্শকদের সিনেমা হলের দিকে আকৃষ্ট করা যায়।
তথ্য সূত্র: The Guardian