মিনিয়াপলিসের গির্জায় গুলি: আহত শিশুকে সহপাঠীদের হাতে গড়া কার্ড, ভালোবাসার পরশ!

মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের একটি চার্চে বন্দুক হামলার ঘটনায় আহত ১১ বছর বয়সী জেনিভিভ বাইসেক। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই শিশুটিকে সাহস যোগাচ্ছে তার সহপাঠীদের পাঠানো হাতে গড়া কার্ডগুলো।

গত বুধবার, মিনিয়াপলিসের অ্যানান্সিয়েশন চার্চে প্রার্থনা চলাকালীন এক ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় গুলিবিদ্ধ হয় বেশ কয়েকজন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল শিশু। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় ১১ বছর বয়সী জেনিভিভ। বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে।

জেনিভিভের খালা ওয়ান্ডা স্টিপেক জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেনিভিভ তার বন্ধুদের পাঠানো অসংখ্য হাতে তৈরি কার্ড পেয়েছে। কার্ডগুলোতে রঙিন তারা, পুঁতি এবং নানা ধরনের কারুকার্য করা হয়েছে। হাসপাতালের বিছানার চারপাশে সেগুলো সাজানো হয়েছে, যা দেখে সে আনন্দিত হচ্ছে।

ওয়ান্ডা আরও জানান, “এই কার্ডগুলো তৈরি করেছে অন্য শিশুরা, যাদের নিজেদেরও হয়তো কোনো না কোনো ট্রমা বা আঘাত রয়েছে। তবুও তারা জেনিভিভের প্রতি ভালোবাসা দেখাচ্ছে। জেনিভিভ যেন তাদের এই ভালোবাসার বার্তা সবসময় অনুভব করতে পারে, সেকারণেই তার চারপাশে কার্ডগুলো লাগানো হয়েছে।”

বন্দুক হামলায় জেনিভিভ সহ মোট ২০ জন আহত হয়। হামলাকারী ২৩ বছর বয়সী রবিন ওয়েস্টম্যান নামের এক ব্যক্তি, যিনি পরে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার সময় চার্চে অ্যানান্সিয়েশন ক্যাথলিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং অন্যান্যরা প্রার্থনা করতে জড়ো হয়েছিল।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা এখনো গুরুতর। ঘটনার পর জেনিভিভ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। জ্ঞান ফেরার পর সে সবার আগে জানতে চেয়েছিল, অন্য শিশুদের কী হয়েছে।

জেনিভিভ-এর খালা জানান, জেনিভিভকে এখনো জানানো হয়নি হামলায় কারা নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ বছর বয়সী ফ্লেচার মারকেল তাদের প্রতিবেশী এবং পরিবারের বন্ধু ছিল।

এই ঘটনার পর স্থানীয় সম্প্রদায়ের মানুষজন জেনিভিভ ও তার পরিবারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। অনেকে অনলাইনে অর্থ সাহায্য করছেন, আবার কেউ কেউ গাছের সঙ্গে ফিতা বেঁধে শোক প্রকাশ করেছেন।

ওয়ান্ডা বলেন, “এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটলে মনে হয়, জগৎটা বুঝি খারাপ লোকে ভরে গেছে। তবে মানুষের এই ভালোবাসা দেখে আমরা অভিভূত। এই সমর্থন আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে এবং তাদের ভালোবাসাই আমাদের আরোগ্য লাভের পথে সাহায্য করবে।”

শনিবার রাতে অ্যানান্সিয়েশন স্কুলের মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রার্থনাসভায় ফাদার ডেনিস জেহরেন বলেন, “আমরা এখানে নতুন দিনের আলো দেখছি। গভীর অন্ধকারেই যেন ঈশ্বরের আলো আরও উজ্জ্বলভাবে প্রকাশিত হয়।”

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *