মিনিয়াপলিসের মেয়র নির্বাচন: জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনার পর পুলিশি সংস্কারের প্রশ্নে বিভক্ত শহর।
যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিস শহরে মেয়র নির্বাচন আসন্ন, আর এই নির্বাচনের কেন্দ্রে রয়েছে পুলিশি সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়, যা এখনো শহরটির রাজনৈতিক আলোচনায় প্রধান্য বিস্তার করে আছে। মেয়র নির্বাচনের প্রার্থীরা এখন এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের অবস্থান তুলে ধরছেন।
মিনিয়াপলিসের পুলিশ বিভাগ বর্তমানে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর পুলিশের প্রতি জনসাধারণের আস্থা কমে যায়, যা বিভাগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এর ফলস্বরূপ, কর্মী সংকট দেখা দেয়, যা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে তোলে। বর্তমানে, পুলিশ বিভাগের লোকবল ধীরে ধীরে বাড়ানো হচ্ছে, কিন্তু এখনও অনেক সমস্যা বিদ্যমান।
বর্তমান মেয়র, জ্যকব ফ্রে, পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। অন্যদিকে, তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ওমর ফাতেহ্ পুলিশের কিছু দায়িত্ব অন্যান্য বিভাগের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। এই দুই প্রার্থীর ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি শহরের ভোটারদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নির্বাচনে জয়ী যিনিই হোন না কেন, মিনিয়াপলিসকে পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে ফেডারেল ও রাজ্যের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর, বিচার বিভাগ মিনিয়াপলিস পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এবং শহরের পুলিশ বিভাগের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এর ফলস্বরূপ, শহরটিকে সংস্কারের জন্য একটি চুক্তিতে আসতে হয়েছে। এই সংস্কার কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা এখন দেখার বিষয়।
শহরের নিরাপত্তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই সীমাবদ্ধ নেই। স্থানীয় বাসিন্দারাও তাদের উদ্বেগের কথা জানাচ্ছেন। সম্প্রতি, একটি ব্যবসার উপর হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ প্রশংসিত হয়েছে। এই ঘটনা পুলিশের ভালো কাজের একটি উদাহরণ, যা জনসাধারণের মধ্যে তাদের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই নির্বাচনের ফলাফল মিনিয়াপলিসের ভবিষ্যৎকে গভীরভাবে প্রভাবিত করবে। জনগণের নিরাপত্তা এবং পুলিশের সংস্কার—এই দুটি বিষয় কিভাবে সমন্বয় করা যায়, সেটাই হবে নতুন মেয়রের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে মিনিয়াপলিসবাসী তাদের শহরের জন্য একটি নতুন দিকনির্দেশনা বেছে নেবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।