মিনেসোটায় বন্দুকবাজের তাণ্ডব: ৪০ ঘণ্টা ধরে ভীতি!

মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে রাজনীতিবিদদের উপর হামলা: আতঙ্কে কাঁপছে আমেরিকা।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। এক ব্যক্তি, যার নাম ভেন্স বোয়েল্টার, রাজনীতিবিদদের উপর হামলা চালায়। এই হামলায় একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

ঘটনার জেরে পুরো আমেরিকায় রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ১৪ই জুন, শনিবার। বোয়েল্টার নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে রাজ্যের সিনেটর জন হফম্যানের বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালায়। হফম্যান এবং তাঁর স্ত্রী ইভেটকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়।

ভাগ্যক্রমে, তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান, তবে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন।

এরপর বোয়েল্টার একই কায়দায় আরও কয়েকজন রাজনীতিবিদের বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি সেখানকার নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পরিচয় দিয়ে কথা বলেন এবং তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

তিনি অন্তত ৭০ জন রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং অধিকারকর্মীর একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন, যাদের তিনি আক্রমণের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

পরের ঘটনা ছিল ব্রুকলিন পার্কের প্রাক্তন স্পিকার মেলিসা হোর্টম্যানের বাড়ি। বোয়েল্টার সেখানে পৌঁছে গুলি চালান।

এতে মেলিসা হোর্টম্যান এবং তাঁর স্বামী মার্ক নিহত হন। ঘটনার পর বোয়েল্টার পালিয়ে যান এবং শুরু হয় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান।

পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং বোয়েল্টারকে ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। অবশেষে, ১৫ই জুন, রবিবার তিনি গ্রিন আইল এলাকায় ধরা পড়েন।

বোয়েল্টারকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চরম রক্ষণশীল আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এই হামলা চালিয়েছেন।

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের রাজনীতিবিদরা তাঁদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

অনেকে তাঁদের বাড়ির ঠিকানা গোপন রাখছেন এবং সরকারি নিরাপত্তা চেয়েছেন। ঘটনার শিকার সিনেটর জন হফম্যানের স্ত্রী ইভেট হফম্যান এক বিবৃতিতে জানান, তাঁরা এই ক্ষতি সহজে ভুলতে পারবেন না।

তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জোসেফ থম্পসন এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “এটি আমাদের গণতন্ত্র এবং জীবনযাত্রার উপর একটি ভয়ঙ্কর আঘাত।”

বোয়েল্টারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে হত্যা ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।

এই ঘটনার পর, রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিভিন্ন মহল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক বিভেদ এবং ঘৃণা থেকে এমন ঘটনাগুলো বাড়ছে।

জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে এবং রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই ধরনের সহিংসতার মোকাবিলা করা সম্ভব।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *