মিনেসোটা রাজ্যের আইনপ্রণেতা, মেলিসা হর্টম্যান এবং তার স্বামী মার্ক হর্টম্যানকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শনিবার তাদের নিজ বাসভবনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে, যা পুরো রাজ্যে গভীর দুঃখের সৃষ্টি করেছে।
এই ঘটনায় শুধু এই দম্পতির জীবনই কেড়ে নেওয়া হয়নি, তাদের পরিবারের প্রিয় পোষ্য, গোল্ডেন রিট্রিভার প্রজাতির কুকুর গিলবার্টও নিহত হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, হামলাকারী ভ্যান্স বোয়েল্টার নামের এক ব্যক্তি, নিজেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে হর্টম্যান দম্পতির বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তাদের উপর গুলি চালায়।
এই হামলায় গুরুতর আহত হন রাজ্যের আইনপ্রণেতা মেলিসা হর্টম্যান এবং তার স্বামী। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের মৃত্যু হয়।
মর্মান্তিক হলো, গুলির আঘাতে আহত হয়ে গিলবার্টকেও বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকেরা।
হর্টম্যান দম্পতির প্রতিবেশী এবং বন্ধু এমিলি হিল জানান, এই ঘটনা তাদের এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য “অত্যন্ত বেদনাদায়ক”।
নিহত মেলিসা হর্টম্যান পশুপ্রেমী ছিলেন এবং কুকুর উদ্ধার কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি সবসময় পশুদের ভালোবাসতেন এবং তাদের প্রতি যত্নবান ছিলেন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত বোয়েল্টার একই দিনে আরও একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছিলেন। সেখানে তিনি রাজ্যের সিনেটর জন হফম্যান এবং তার স্ত্রী ইভেট হফম্যানকে গুলি করেন।
সৌভাগ্যক্রমে, তারা প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পর বোয়েল্টারকে আটক করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ এই ঘটনাকে রাজনৈতিক সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “একজন মানুষের অকল্পনীয় কাজ মিনেসোটা রাজ্যের পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা রাজনৈতিক মতপার্থক্যগুলো এই ধরনের সহিংসতা দিয়ে মোকাবেলা করতে পারি না।”
মেলিসা হর্টম্যান শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন ভালো মা এবং স্ত্রী।
এমিলি হিল জানান, মেলিসা সবসময় “বাস্তববাদী” ছিলেন এবং নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তার বিশেষ দক্ষতা ছিল। তিনি তার দুই সন্তান, সোফিয়া এবং কলিনের প্রতিও ছিলেন খুবই নিবেদিতপ্রাণ।
এই শোকাবহ ঘটনা মিনেসোটা রাজ্যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। রাজ্যের মানুষ তাদের প্রিয় নেতার অকাল প্রয়াণে শোকাহত এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল