“মিশন: ইম্পসিবল” : অ্যাকশন-এর দুনিয়ায় টম ক্রুজের অবিস্মরণীয় অভিযান
নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে, “মিশন: ইম্পসিবল” (Mission: Impossible) সিনেমা সিরিজটি বিশ্বজুড়ে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। স্পাই থ্রিলার (spy thriller) ঘরানার এই সিনেমাগুলো শুধু অ্যাকশন (action) এবং স্টান্টের (stunt) জন্যেই বিখ্যাত নয়, বরং গল্পের গভীরতা এবং আকর্ষণীয় প্লটের কারণেও দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সম্প্রতি সিনেমাটির নতুন কিস্তি মুক্তি পাওয়ার পর, সিরিজটি নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে। আসুন, এই সিরিজের সিনেমাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
“মিশন: ইম্পসিবল”-এর যাত্রা:
“মিশন: ইম্পসিবল” -এর গল্প শুরু হয়েছিল ১৯৬৬ সালের একটি টেলিভিশন সিরিজ (television series) দিয়ে। পরবর্তীতে, এই সিরিজের ধারণা থেকেই নির্মিত হয় সিনেমাগুলো, যেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা টম ক্রুজ (Tom Cruise)।
সিনেমাগুলোতে ইথান হান্ট (Ethan Hunt) নামক একজন আইএমএফ (IMF – Impossible Missions Force)-এর এজেন্টের দুঃসাহসিক অভিযানগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
সিনেমার তালিকা এবং তাদের গল্প:
১. মিশন: ইম্পসিবল (Mission: Impossible) – মুক্তি সাল: ১৯৯৬
প্রথম সিনেমাটিতে ইথান হান্ট তার দলের সদস্যদের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হন এবং একটি মিশনের সময় তার পুরো দল নিহত হয়। এরপর তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে এবং আসল বিশ্বাসঘাতককে খুঁজে বের করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ, জোন ভইট (Jon Voight) এবং জ্যঁ রেনো (Jean Reno)।
২. মিশন: ইম্পসিবল ২ (Mission: Impossible II) – মুক্তি সাল: ২০০০
এই পর্বে ইথান হান্ট-কে একটি মারাত্মক ভাইরাস (virus) প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভাইরাসটি তৈরি করেছে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা, যারা এটির মাধ্যমে মুনাফা করতে চায়।
এই সিনেমায় ইথানের সাথে যোগ দেন নাইয়া নর্ডফ (Nyah Nordoff) এবং ভিং রেহেমস (Ving Rhames)।
৩. মিশন: ইম্পসিবল ৩ (Mission: Impossible III) – মুক্তি সাল: ২০০৬
এই সিনেমায় ইথান হান্ট এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর (arms dealer) হাত থেকে একজন জিম্মিকে (hostage) বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মিশনটি সফল করতে গিয়ে তিনি নতুন এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন।
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজের সাথে মিশেল মোনাঘান (Michelle Monaghan), সাইমন পেগ (Simon Pegg) এবং ফিলিপ সেইমোর হফম্যান (Philip Seymour Hoffman)।
৪. মিশন: ইম্পসিবল – ঘোস্ট প্রোটোকল (Mission: Impossible – Ghost Protocol) – মুক্তি সাল: ২০১১
এই পর্বে আইএমএফ-কে একটি বোমা হামলার (bombing) জন্য দায়ী করা হয়। এরপর ইথান হান্ট এবং তার দল তাদের সম্মান পুনরুদ্ধার করতে এবং একটি বিশ্বযুদ্ধ (world war) থামাতে চেষ্টা করেন।
সিনেমাটিতে টম ক্রুজের সাথে অভিনয় করেছেন জেরেমি রেনার (Jeremy Renner) এবং পাওলা প্যাটন (Paula Patton)।
৫. মিশন: ইম্পসিবল – রোগ নেশন (Mission: Impossible – Rogue Nation) – মুক্তি সাল: ২০১৫
এই পর্বে ইথান হান্ট এবং তার দল “সিন্ডিকেট” নামক একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের (terrorist organization) বিরুদ্ধে লড়াই করে।
এই সিনেমায় রেবেকা ফার্গুসন (Rebecca Ferguson) এবং অ্যালেক বাল্ডউইন (Alec Baldwin)-কে দেখা যায়।
৬. মিশন: ইম্পসিবল – ফলআউট (Mission: Impossible – Fallout) – মুক্তি সাল: ২০১৮
“রোগ নেশন”-এর ঘটনার ধারাবাহিকতায়, “সিন্ডিকেট”-এর সদস্যরা “অ্যাপোস্টলস” নামে একটি সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়। এই দলে তারা পারমাণবিক বোমা (nuclear bombs) তৈরির চেষ্টা করে।
সিনেমাটিতে আগের অভিনয়শিল্পীদের সাথে ভ্যানেসা কিরবি (Vanessa Kirby) এবং অ্যাঞ্জেলা বাসেটকে (Angela Bassett) দেখা যায়।
৭. মিশন: ইম্পসিবল – ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান (Mission: Impossible – Dead Reckoning Part One) – মুক্তি সাল: ২০২৩
সপ্তম কিস্তিতে গল্প মোড় নেয় আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (artificial intelligence) দিকে। এখানে “দ্য এন্টিটি” (The Entity) নামক একটি উন্নত সামরিক এআই-কে (AI) কেন্দ্র করে গল্প সাজানো হয়েছে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন অস্ত্র এবং আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখে।
“মিশন: ইম্পসিবল” সিনেমাগুলো বর্তমানে বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে (streaming platform) দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশে সিনেমাগুলো কোন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাচ্ছে, তা দর্শক তার পছন্দের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।
“মিশন: ইম্পসিবল” সিরিজটি কেবল একটি সিনেমা সিরিজ নয়, এটি অ্যাকশন এবং স্পাই থ্রিলার প্রেমীদের জন্য একটি দারুণ অভিজ্ঞতা।
টম ক্রুজের অভিনয়, আকর্ষণীয় গল্প এবং দুর্দান্ত অ্যাকশন দৃশ্য এই সিরিজটিকে দর্শকদের কাছে আরও বেশি প্রিয় করে তুলেছে।
তথ্য সূত্র: People