টম ক্রুজের ‘মিশন: ইম্পসিবল’ ফ্র্যাঞ্চাইজি: অ্যাকশন-এর আড়ালে অফিসের গল্প
চলচ্চিত্র জগতে ‘মিশন: ইম্পসিবল’ একটি পরিচিত নাম। এই সিরিজে টম ক্রুজের অসাধারণ সব অ্যাকশন দৃশ্য দর্শকদের মন জয় করেছে, তা বলাই বাহুল্য।
তবে, শুধু স্টান্ট বা অ্যাকশনের জন্য নয়, এই ফ্র্যাঞ্চাইজি’র সাফল্যের পেছনে রয়েছে অফিসের কর্মপরিবেশের একটি দারুণ চিত্র। কিভাবে? আসুন, দেখা যাক।
গত ১৫ বছরে ‘মিশন: ইম্পসিবল’ এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে, তার কারণ এর গল্প বলার ধরন। এখানে দেখানো হয়, কিভাবে একটি দল একসঙ্গে কাজ করে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলে।
সিনেমার দলনেতা ইথান হান্ট এবং তার সহকর্মীদের মধ্যেকার সম্পর্ক, আধুনিক অফিসের কর্মীদের মতোই। বন্ড বা বর্ন-এর মতো একক চরিত্র নির্ভর গল্পের চেয়ে এখানে দলগত কাজের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
ইথান হান্টের দলে আছেন অভিজ্ঞ লুথার স্টিকেল (ভিং রাহমেস), যিনি ১৯৯৬ সালের প্রথম সিনেমা থেকে এই সিরিজে আছেন। এছাড়া, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বেঞ্জি ডান (সাইমন পেগ) এবং এজেন্ট ইলসা ফাউস্ট (রেবেকা ফার্গুসন) এর মতো চরিত্ররা এই দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তাদের কাজকর্ম যেন অফিসের হাসি-ঠাট্টা আর দায়িত্ব পালনের প্রতিচ্ছবি।
সিনেমার গল্পে প্রায়ই দেখা যায়, তারা অসম্ভব সব পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছেন। যেমন, একবার লুথার স্টিকল বলেছিলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের আলোচনা দেশদ্রোহিতার শামিল।”
আর বেঞ্জি মজা করে উত্তর দেয়, “অথবা, আমরা যাকে বলি সোমবার।” তাদের চরিত্রগুলো অফিসের বিভিন্ন ধরনের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে।
অভিজ্ঞ লুথার সবসময় সঠিক পরামর্শ দেন, বেঞ্জি প্রযুক্তিগত সহায়তা করে, আর ইথান হান্ট যেন দলের প্রধান আকর্ষণ।
সিনেমায় অফিসের মতো প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্কও দেখা যায়। ইথান হান্টের স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে, তিনি অন্য নারীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান, যাদের মধ্যে অনেকে তার কাজের প্রতিদ্বন্দ্বী।
এদের মধ্যে কেউ হয় চোর, কেউ বা ষড়যন্ত্রকারী।
ইথান হান্ট যেন একজন আদর্শ কর্মী, যিনি ঝুঁকি নিতে ভালোবাসেন। তিনি সবসময় তার দলের কথা ভাবেন এবং তাদের রক্ষা করতে চান।
সিনেমার গল্পে দেখা যায়, তিনি কীভাবে তার সহকর্মীদের রক্ষা করেন।
এই সিরিজের সাফল্যের কারণ হলো, এটি অফিসের সাধারণ কর্মীদের জীবনকে তুলে ধরে। এই সিনেমায় দেখানো হয়, কিভাবে একটি দল একসঙ্গে কাজ করে এবং প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে।
‘মিশন: ইম্পসিবল’ ফ্র্যাঞ্চাইজি শুধু একটি অ্যাকশন সিনেমা নয়, এটি দলবদ্ধভাবে কাজ করার এবং অফিসের সম্পর্কের একটি দারুণ উদাহরণ।
সিনেমার গল্পে জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে যে দ্বন্দ্ব, তাও বেশ স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আসন্ন সিনেমা ‘মিশন: ইম্পসিবল – ডেড রেকনিং’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে, যেখানে এই সিরিজের ভবিষ্যৎ আরও স্পষ্ট হবে। তবে, ফ্র্যাঞ্চাইজির মূল আকর্ষণ যে অফিসের কর্মীদের গল্প, তা বজায় থাকবে বলেই ধারণা করা যায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান