যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ওমাহা শহরের মিসৌরি নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া তিন কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১৫ই এপ্রিল, এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল।
নিহতরা হলো ১৮ বছর বয়সী লাহ ট্রে মু, ১৮ বছর বয়সী লিয়ানা গ্রিন এবং ১১ বছর বয়সী এহ ক্রেস মু।
জানা যায়, একটি মাছ ধরার ট্রিপে থাকাকালীন, তাদের মধ্যে একজন পানিতে পড়ে যায়। অন্যদের মধ্যে যারা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিল, তারাও ডুবে যায়।
এই দলের সাথে থাকা ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী, সৌভাগ্যবশত, অক্ষত অবস্থায় ছিল, তবে সে এই ভয়াবহ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে গভীর শোকাহত।
ওমাহা ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কর্মীরা দুই সপ্তাহ ধরে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর, বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করে বলা হয়, “আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং নিহত কিশোরীদের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই তরুণ জীবনহানির ঘটনা আমাদের পুরো সম্প্রদায়ের জন্য একটি গভীর শোকের কারণ। আমরা তাদের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।”
অনুসন্ধানকারীরা জানান, ট্রে মু-এর মরদেহ ২৬শে এপ্রিল শনিবার, এনপি ডজ পার্কের কাছে পাওয়া যায়। এরপর, ২৯শে এপ্রিল মঙ্গলবার গ্রিন এবং ক্রেস মু-এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এবং তল্লাশি অভিযান সমাপ্ত করা হয়।
লিয়ানা গ্রিনের পিসি, নিকেল গ্রিফি, সংবাদমাধ্যমকে জানান, পরিবার এখন “তাদের মেয়েদের ফিরে পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা দুঃখিত, তবে তাদের ফিরে পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা এমন একটি সম্প্রদায়, যা একে অপরের প্রতি সমর্থন জুগিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে।”
খবর পাওয়ার পর থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা মেয়েদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়। তারা নিখোঁজদের সন্ধানে যাওয়া দলের জন্য খাবার তৈরি করে সাহায্য করেছে।
মিসৌরি নদীর তীরে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিকেল গ্রিফি বলেন, “আমরা সবাই একই বেদনা অনুভব করছি, ভাষার ভিন্নতা এখানে কোনো বাধা নয়।” স্থানীয় কমিউনিটি লিডার, ক্রম লুইস, উদ্ধার কাজে সহায়তাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “সবার প্রার্থনা, দেশব্যাপী সাহায্য এবং সম্প্রদায়ের সহযোগিতাই আমাদের এই কঠিন কাজটি করতে সাহায্য করেছে।”
লুইসের মতে, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে নদীর আশেপাশে “সাঁতার কাটা নিষেধ” অথবা “পানিতে বিপদ” -এর মতো সতর্কতামূলক চিহ্ন স্থাপন করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমি নদী সম্পর্কে অনেক অজানা বিষয় জানতে পেরেছি। সাধারণ মানুষ জানে না যে এই নদী কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।”
তথ্য সূত্র: পিপল