খেলাধুলার জগতে প্রযুক্তি সবসময়ই নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। এবার সেই ধারাবাহিকতায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লীগ বেসবলে (MLB) যুক্ত হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক এক প্রযুক্তি।
আসন্ন অল-স্টার গেমে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হবে ‘অটোমেটেড বল-স্ট্রাইক’ প্রযুক্তি, যা খেলাটির আমূল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এই প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো, মাঠের আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো কমিয়ে খেলার স্বচ্ছতা আনা।
সাধারণত, বেসবলে ‘স্ট্রাইক জোন’ নির্ধারণের দায়িত্বে থাকেন আম্পায়ার। এই ‘স্ট্রাইক জোন’ হলো একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র, যেখানে বল প্রবেশ করলে সেটাকে ‘স্ট্রাইক’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
তবে, অনেক সময় আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে খেলোয়াড়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা যায়। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নতুন এই পদ্ধতিতে, খেলোয়াড়েরা আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন।
প্রতিটি দলের জন্য শুরুতে দুটি চ্যালেঞ্জ বরাদ্দ থাকবে। কোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা হলে, সেই দল তাদের চ্যালেঞ্জ বহাল রাখতে পারবে।
পিচার, ক্যাচার অথবা ব্যাটসম্যান, এদের মধ্যে যে কেউ আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন। খেলোয়াড়রা তাদের ক্যাপ অথবা হেলমেটে দুবার টোকা দিয়ে এই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন।
এরপর মাঠের বড় পর্দায় বলের গতিপথ এবং ‘স্ট্রাইক জোন’ দেখানো হবে, যা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা হবে।
তবে, এই প্রযুক্তি নিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ডেট্রয়েট টাইগার্সের তারকা পিচার তারিক স্কুবাল জানিয়েছেন, তিনি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আগ্রহী নন।
অন্যদিকে, পিটসবার্গ পাইরেটসের খেলোয়াড় পল স্কেনেস মনে করেন, আম্পায়ারের মানবীয় দিকটা খেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
লস অ্যাঞ্জেলেস ডজারের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ক্লেটন কার্শো এই প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং ব্যাটসম্যানদের জন্য ‘স্ট্রাইক জোন’ কিভাবে নির্ধারণ করা হবে, তা জানতে চেয়েছেন।
বেসবলের অনেক ভক্ত ‘হিউম্যান এলিমেন্ট’ বা মানবীয় বিষয়টির পক্ষে।
তাদের মতে, আম্পায়ারের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত খেলার আকর্ষণ বাড়ায়।
আটলান্টা ব্রাভসের পিচার এবং এনএল সাই ইয়ং অ্যাওয়ার্ড জয়ী ক্রিস সেলও এই মতের সমর্থন করেন।
যদিও বেসবল খেলাটি বাংলাদেশে খুব বেশি পরিচিত নয়, তবে খেলার মাঠে প্রযুক্তির ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় খেলাতেও এখন প্রযুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে, বেসবলের এই নতুন পদক্ষেপ ভবিষ্যতে অন্যান্য খেলাতেও প্রযুক্তির ব্যবহারের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
এখন দেখার বিষয়, এই প্রযুক্তি কতটা সফল হয় এবং খেলাটিকে আরও উন্নত করতে পারে কিনা।
তথ্য সূত্র: CNN