আতঙ্ক! ‘বোলিং পিন’ ব্যাট নিয়ে মুখ খুললেন এমএলবি প্রধান, তোলপাড়!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় খেলা বেসবলে (Baseball) প্রযুক্তি এবং খেলার ধরনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন মেজর লীগ বেসবলের (MLB) কমিশনার রব ম্যানফ্রেড। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ‘টরপেডো’ ব্যাট (Torpedo bat) ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছেন এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ‘রোবট আম্পায়ার’ (Robot Umpire) বা স্বয়ংক্রিয় আম্পায়ার পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।

ম্যানফ্রেড মনে করেন, ‘টরপেডো’ ব্যাট বেসবলের জন্য খুবই উপযোগী। এই ব্যাট খেলোয়াড়দের জন্য খেলার কৌশল উন্নত করতে সহায়ক হবে।

‘টরপেডো’ ব্যাট হলো এমন এক ধরনের ব্যাট, যা খেলার সময় কাঠের ওজন পুনর্বিন্যাস করে, যা খেলোয়াড়দের বলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। নিউইয়র্ক ইয়্যাঙ্কিস (New York Yankees) দলের খেলোয়াড়েরা এই ধরনের ব্যাট ব্যবহার করে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি হোম রান (Home Run) করেছেন, যা খেলার ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

এই প্রসঙ্গে ম্যানফ্রেড বলেন, “আমার মনে হয় ‘টরপেডো’ ব্যাট নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা প্রমাণ করে বেসবল এখনো সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ, সামান্য কিছু বিষয় নিয়েও এখানে মানুষজন বেশ আলোচনা-সমালোচনা করে থাকে।”

অন্যদিকে, খেলাটিকে আরও নির্ভুল করতে আম্পায়ারিংয়ে প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে। ম্যানফ্রেড জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে মাইনর লিগে (Minor League) পরীক্ষামূলকভাবে ‘স্বয়ংক্রিয় বল-স্ট্রাইক’ (Automated Ball-Strike – ABS) পদ্ধতি ব্যবহারের পর ২০২৬ সাল নাগাদ মেজর লিগেও এটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই পদ্ধতিতে, আম্পায়াররা মাঠেই থাকবেন, তবে বল ও স্ট্রাইক-এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘হক-আই’ (Hawk-Eye) প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়েরা চ্যালেঞ্জ জানালে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে তা পুনরায় যাচাই করা হবে।

ম্যানফ্রেড মনে করেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে খেলা আরও আকর্ষণীয় হবে এবং মাঠের কর্মকর্তাদের ভুলত্রুটি সংশোধনে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, “চ্যালেঞ্জিং সিস্টেমের সমস্যা হলো, এর মাধ্যমে আপনার ভুলগুলো ধরা পড়ে। আর কেউই চায় না যে, ৪০-৫০ হাজার দর্শকের সামনে তার ভুলটা প্রকাশ হোক।”

তবে, খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেকেই এই স্বয়ংক্রিয় আম্পায়ার পদ্ধতির বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের মতে, এতে খেলার ঐতিহ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ম্যানফ্রেড অবশ্য খেলোয়াড়দের এই উদ্বেগের কথা বিবেচনা করে একটি মাঝামাঝি পথ বেছে নিতে চাইছেন, যেখানে মানবীয় উপাদানও থাকবে এবং খেলার মানও উন্নত হবে।

বেসবলের এই পরিবর্তনগুলো খেলাটিকে আরও আধুনিক এবং আকর্ষণীয় করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় খেলাতেও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে, যেখানে ডিআরএস (DRS)-এর মতো প্রযুক্তি এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বেসবলের এই নতুন পদক্ষেপগুলো খেলাপ্রেমীদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে এবং ভবিষ্যতে খেলাটির উন্নতিতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *