বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের জড়তাও কি বাড়ে? অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যায়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স বাড়লেও শরীরকে সচল রাখা সম্ভব। সম্প্রতি, সিএনএন-এর একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানে শারীরিক থেরাপিস্ট এবং পেশাদার ক্রীড়াবিদ ড. কেলি স্টাররেট এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর মতে, জীবনযাত্রায় সামান্য কিছু পরিবর্তন এনে বয়সকালে শরীরের নমনীয়তা বজায় রাখা যেতে পারে।
ড. স্টাররেট-এর মতে, নমনীয়তা বা মুভমেন্ট রেঞ্জ-এর ধারণাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ব্যাখ্যা করেন, আমাদের শরীরের পেশি ও হাড়ের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে হলে নিয়মিত নাড়াচাড়া করা প্রয়োজন।
তাঁর মতে, “নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট-এর কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে।” তিনি আরও যোগ করেন, “যদি আপনি আপনার জয়েন্ট এবং পেশীকে সারা জীবন সচল রাখতে চান, তাহলে সেগুলোর নিয়মিত ব্যবহার জরুরি।”
তাহলে, কিভাবে বয়সকালে শরীরকে সচল রাখা যায়? ড. স্টাররেট-এর পরামর্শগুলি নিচে দেওয়া হলো:
১. বিভিন্ন ধরনের অঙ্গভঙ্গি করুন: আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা সাধারণত বসা, হাঁটাচলা এবং শোয়ার মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখি।
ড. স্টাররেট-এর মতে, শরীরের স্বাভাবিক মুভমেন্ট-এর জন্য আরও বেশি চেষ্টা করা দরকার। তিনি পরামর্শ দেন, “সন্ধ্যায় টিভি দেখার সময় মাটিতে বসুন অথবা বই পড়ুন। এতে আপনার কোমর ও হাঁটুর নমনীয়তা বাড়বে।”
২. বার-এ ঝুলে থাকুন: কাঁধ, ঘাড় বা পিঠে ব্যথা হলে, বার-এ ঝোলা খুবই উপকারী।
“দিনে মাত্র তিন মিনিটের জন্য ঝুলে থাকুন,” পরামর্শ ড. স্টাররেট-এর। এক্ষেত্রে, বার-এর বদলে দরজার চৌকাঠ অথবা অন্য কোনো অবলম্বন ব্যবহার করা যেতে পারে।
এমনকি, যোগাসন-এর “অ্যাডো মুখা শ্বাসনাসন” (downward-facing dog) ভঙ্গিমাও এই ক্যাটাগরিতে পরে।
৩. বেশি হাঁটুন: প্রতিদিন পর্যাপ্ত হাঁটা শরীরের জড়তা কমাতে এবং নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।
ড. স্টাররেট-এর মতে, প্রতিদিন ৮,০০০ পদক্ষেপ হাঁটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। “হাঁটা আমাদের হাড়, টিস্যু এবং পেশীকে সক্রিয় রাখে।”
এছাড়াও, হাঁটা শরীরের বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করে।
৪. খেলাধুলা করুন: খেলাধুলা শুধু আনন্দ দেয় না, বরং শরীরের নমনীয়তা বাড়াতেও সাহায্য করে।
আপনার পছন্দের খেলাধুলা অথবা নাচের ক্লাসে যোগ দিন। বন্ধুদের সাথে বিকালে হাঁটতে যাওয়া বা কাছাকাছি কোনো পার্কে ঘুরতে যাওয়াটাও এক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে।
৫. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: সুষম খাবার গ্রহণ করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের জন্য খুবই জরুরি।
প্রতিদিন প্রচুর ফল ও সবজি খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করুন। ড. স্টাররেট-এর পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
ড. স্টাররেট-এর এই পরামর্শগুলো অনুসরণ করে, বয়সকালে শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব।
এছাড়াও, কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন