বৃদ্ধ বয়সে সহজে চলাফেরা! ৫টি সহজ উপায়, যা আপনাকে দেবে কার্যকারিতা

সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে বার্ধক্যেও শরীরের সচলতা অত্যন্ত জরুরি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকেরই একটা ধারণা থাকে যে নমনীয়তা ধরে রাখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে শরীর প্রসারিত করার প্রয়োজন।

কিন্তু আসলে এটি সবসময় সঠিক নয়। বরং, সঠিক পদ্ধতিতে কিছু অভ্যাস তৈরি করার মাধ্যমে বার্ধক্যেও শরীরের সচলতা বজায় রাখা সম্ভব।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের স্বাভাবিক কিছু পরিবর্তন আসে, যেমন পেশি দুর্বল হওয়া বা জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া। তবে, নিয়মিত শরীরচর্চা না করার ফলেই মূলত এই সমস্যাগুলো বাড়ে।

তাই, নিয়মিত কিছু কৌশল অবলম্বন করলে শরীরের সচলতা অনেক দিন পর্যন্ত বজায় রাখা যেতে পারে।

প্রথমেই আসা যাক, নড়াচড়ার প্রসঙ্গে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা ধরনের কাজ করি, যেমন – কোনো জিনিস তোলার জন্য ঝুঁকে বসা, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করা অথবা সোজা হয়ে বসা।

এই কাজগুলোতে শরীরের বিভিন্ন অংশের নড়াচড়া হয়। তাই, ব্যায়ামের সময়ও শরীরের সব অংশের জন্য ব্যায়াম করা উচিত। শরীরের সম্মুখ ও পশ্চাৎ দিক, পাশের দিক এবং ঘূর্ণন – এই তিনটি দিকেই শরীরের মুভমেন্ট করানো প্রয়োজন।

উদাহরণস্বরূপ, স্কোয়াট (squat), সাইড লাঞ্জ (side lunge) এবং কোমরের মোচড় (standing torso twists) এর মতো ব্যায়ামগুলো এক্ষেত্রে খুব উপযোগী।

দ্বিতীয়ত, দিনের বেলা কাজের ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য বিরতি নেওয়া বাঞ্চনীয়। দীর্ঘ সময় ধরে বসে কাজ করার কারণে অনেক সময় কোমর শক্ত হয়ে যায় এবং শরীরের ভঙ্গি দুর্বল হয়ে যায়।

তাই, কিছুক্ষণ পর উঠে দাঁড়িয়ে সামান্য হাঁটাচলা করা, হাত-পা নাড়ানো বা হালকা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। চেয়ার থেকে উঠার সময় কয়েকটা স্কোয়াট করা যেতে পারে অথবা সিড়ি দিয়ে উঠার সময় হালকা কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে।

তৃতীয়ত, প্রতিদিন সকালে অল্প কিছু সময় শরীরচর্চা করা যেতে পারে। সকালে কিছু হালকা ব্যায়াম, যেমন – যোগা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে। এছাড়াও, অফিসে বসে কাজের ফাঁকে কিছু সহজ ব্যায়াম করা যেতে পারে।

নিয়মিত এই ধরনের ব্যায়াম করলে শরীরের সচলতা বাড়ে।

চতুর্থত, শারীরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম করা জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম করলে জয়েন্টগুলো স্থিতিশীল থাকে এবং পেশি মজবুত হয়, যা বার্ধক্যে শরীরের দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে।

হালকা ওজনের ব্যায়াম বা বডিওয়েট ট্রেনিং এক্ষেত্রে খুবই উপযোগী। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ১০ মিনিটের জন্য এই ধরনের ব্যায়াম করা যেতে পারে।

পঞ্চমত, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের নমনীয়তা বাড়ানো যায়। সঠিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে ঘাড়, কাঁধ এবং বুকের পেশি শিথিল হয়, যা শরীরের মুভমেন্টের জন্য খুব জরুরি।

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের সময় গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে এবং ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে।

এই বিষয়গুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে বার্ধক্যেও শরীরের সচলতা বজায় রাখা সম্ভব। যদি কোনো শারীরিক সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *