সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার প্রায় আট ঘণ্টা ধরে চলা এই বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়, যার ফলে অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আঞ্চলিক প্রশাসনের মুখপাত্র আবদিনাসির হিরসি ইদলের বরাত দিয়ে জানা যায়, উদ্ধারকর্মীরা এখনো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে কাজ করছেন।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, যার মধ্যে কিছু এলাকার বাসিন্দারা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া, বন্যার কারণে প্রধান সড়কগুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বৃষ্টির তীব্রতা এত বেশি ছিল যে অনেক এলাকার বাসিন্দারা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হাসান জানান, “আমরা সারারাত বাড়ির ছাদে কাটিয়েছি, ঠান্ডায় কাঁপছিলাম। এমনকি সকালের খাবারও জোটেনি।”
বয়স্ক অনেক মানুষ এখনো আটকা পড়ে আছেন বলেও তিনি জানান। মোগাদিশুর প্রধান বিমানবন্দর, আডেন আব্দুল্লাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল, তবে পরে তা পুনরায় চালু করা হয়েছে।
বন্যার কারণে সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সোমালিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এখনো পর্যন্ত মৃতের সরকারি হিসাব প্রকাশ করেনি, তবে তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
দেশটির জ্বালানি ও জলসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ১১৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তারা রাজধানী সহ অন্যান্য অঞ্চলের জন্য আকস্মিক বন্যার বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সোমালিয়ার মতো দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়ার শিকার হচ্ছে। এর আগে দেশটি দীর্ঘ সময় ধরে খরা এবং তার পরবর্তীতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে।
বাংলাদেশের মতো, সোমালিয়াও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশ। এমন পরিস্থিতিতে, উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণ কমানোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা