সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অল্পবয়সী নারীদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রকোপ বৃদ্ধি একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, ক্যান্সারের হার বিশেষভাবে অল্পবয়সী নারীদের মধ্যে বাড়ছে।
যদিও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা সামগ্রিকভাবে কমছে, তবুও কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার, যেমন স্তন ক্যান্সার, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার (পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্যান্সার), থাইরয়েড ক্যান্সার এবং জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার-এর ঘটনা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা এই বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করছেন। তাদের মতে, এর পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো জীবনযাত্রার পরিবর্তন। অতিরিক্ত ওজন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব—এগুলো ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
এছাড়াও, অল্প বয়সে মেয়েদের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালের শুরু এবং পরিবেশ দূষণও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য বর্জন করা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ করা এবং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা—এগুলো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
অতিরিক্ত মদ্যপানও কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই এটি সীমিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কিছু ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে টিকা (vaccine) নেওয়া যেতে পারে। হেপাটাইটিস বি এবং হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) এর টিকা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার (colon cancer) এবং ফুসফুসের ক্যান্সার (lung cancer) এর মতো রোগগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।
তবে, শুধু রোগ শনাক্তকরণই যথেষ্ট নয়। চিকিৎসার সুযোগ সবার জন্য সমানভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
দরিদ্র ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্যান্সারের চিকিৎসার সুযোগ কম থাকে। তাদের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু পদক্ষেপের পাশাপাশি নীতিগত পরিবর্তনও প্রয়োজন।
পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া সময়ের দাবি।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে পারি এবং সুস্থ জীবন যাপন করতে পারি।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক