মোল্দোভা: ৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার, কী পদক্ষেপ রাশিয়ার?

মোল্দোভা থেকে তিনজন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। এর প্রতিক্রিয়ায় মস্কোও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। সোমবার এই পদক্ষেপের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

মোল্দোভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, কূটনীতিকদের কার্যক্রম তাদের কূটনৈতিক মর্যাদার পরিপন্থী ছিল, যার ‘স্পষ্ট প্রমাণ’ তাদের হাতে রয়েছে। এর পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এর সমুচিত জবাব দেবে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‍রিয়া নোভোস্তি এই খবর জানিয়েছে।

মূলত, রুশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে একজন রুশপন্থী আইনপ্রণেতাকে কারামুক্ত করতে সহায়তার অভিযোগের পরেই এই বিতর্কের সূত্রপাত। অভিযুক্ত আইনপ্রণেতার নাম আলেকজান্ডার নেস্তেরভস্কি। তাকে অবৈধভাবে রাজনৈতিক তহবিলের যোগসাজশে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রুশপন্থী একটি দলের হয়ে কাজ করতেন।

মোল্দোভার নিরাপত্তা সংস্থা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়, নেস্তেরভস্কি ১৮ মার্চ দেশটির রাজধানী চিসিনাও-এর রুশ দূতাবাসে প্রবেশ করছেন। এর ঠিক একদিন পরেই আদালত তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেয়। নেস্তেরভস্কি অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০২৩ সালের স্থানীয় নির্বাচন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের বিষয়ে গণভোটের সময় তিনি কোনো অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

মোল্দোভার নিরাপত্তা সংস্থা আরও জানায়, নেস্তেরভস্কিকে যেদিন সাজা দেওয়া হয়, সেদিন একটি সাদা গাড়িতে করে বিতর্কিত ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৯০-এর দশকে ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলটি মোল্দোভার নিয়ন্ত্রণ থেকে নিজেদের আলাদা করে ফেলেছিল।

তবে, রুশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। তারা মোল্দোভিয়ার কর্তৃপক্ষকে ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

রিয়া নোভোস্তি আরও জানায়, বহিষ্কৃত কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন জয়েন্ট কন্ট্রোল কমিশনের কো-চেয়ারম্যান। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সাল থেকে এই কমিশন ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলের শান্তিরক্ষী বাহিনীর তত্ত্বাবধান করে আসছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আগামী শরতে মোল্দোভায় একটি সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা দেশটির সরকার, যারা ইইউ’র সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে, তাদের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেবে।

এদিকে, স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ব্রিটেন ও পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক এবং প্রতিরক্ষা কমিশনার সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁরা নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *