যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের একটি ছোট্ট শহরে একটি বারে বন্দুক হামলার ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে এক সপ্তাহ পর হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গত ১লা আগস্ট, স্থানীয় সময় অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের আনাকোন্ডা শহরের একটি বারে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালান মাইকেল পল ব্রাউন নামের এক ব্যক্তি।
হামলায় ড্যানিয়েল বেইলি (৫৯), ন্যান্সি কেলি (৬৪), ডেভিড লিচ (৭০) এবং টনি পাম (৭৪) নিহত হন।
ঘটনার পর ব্রাউন পালিয়ে যান, ফলে পুরো শহরজুড়ে ভীতি ছড়িয়ে পরে।
আনাকোন্ডা শহরটি সাধারণত শান্ত ও শান্তিপূর্ণ একটি স্থান হিসেবে পরিচিত।
কিন্তু বারের এই হত্যাকাণ্ডের পর এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়।
ঘটনার পর থেকে স্থানীয়রা রাতে বন্দুক হাতে ঘুমোতে শুরু করেন এবং তাদের বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড় ও গাছপালাগুলোর দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে শুরু করেন।
কারণ হামলাকারী ব্রাউন আত্মগোপনের জন্য এইসব স্থান ব্যবহার করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
ঘটনার পর ব্রাউনকে আটকের জন্য ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), স্থানীয় পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে অভিযান শুরু করে।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা এই অভিযানে প্রায় ২৫০ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য অংশ নেন।
তারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে তল্লাশি চালান।
জানা গেছে, ব্রাউন পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি সাদা ফোর্ড এফ-১৫০ ট্রাক চুরি করেছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাউন সেনাবাহিনীর একজন সাবেক সদস্য ছিলেন।
ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন।
ব্রাউনের এক আত্মীয় সিএনএনকে জানান, সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন সময়ে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কিছু সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন এবং সেই ঘটনার পর তিনি আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।
অবশেষে, ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর, ব্রাউনকে গুলি করার স্থান থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
বর্তমানে তিনি আনাকোন্ডা-ডিয়ার লজ কাউন্টি কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্রাউনের বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ আনা হবে, সে বিষয়ে তারা দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, ঘটনার পর শহরটির বাসিন্দারা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া, স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছেন।
এখানকার কয়েকটি রেস্টুরেন্ট তাদের বিক্রয়ের একটি অংশ নিহতদের পরিবারকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
শহরবাসী ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন