অবসর জীবন: ইউরোপের এই গোপন স্বর্গরাজ্যে কম খরচে স্বপ্ন পূরণ!

আজকাল অনেকেই জীবনের একটা পর্যায়ে বিদেশে বসবাসের কথা ভাবেন। উন্নত জীবনযাত্রার সুযোগ, প্রকৃতির সান্নিধ্য অথবা ব্যবসার প্রসার – বিভিন্ন কারণে মানুষ দেশান্তরী হতে চায়। আজকের প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করবো ইউরোপের একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য নিয়ে, যেখানে তুলনামূলকভাবে কম খরচে উন্নত জীবন কাটানো সম্ভব।

জায়গাটি হলো মন্টেনিগ্রো, যা অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের তীরে অবস্থিত।

**মন্টেনিগ্রো: ইউরোপের এক লুকানো রত্ন**

ক্রোয়েশিয়া ও আলবেনিয়ার মাঝে অবস্থিত মন্টেনিগ্রো একটি ছোট দেশ, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত। পাহাড়, সমুদ্র আর মনোরম উপকূল নিয়ে গঠিত এই দেশটি এখন বিশ্বজুড়ে বসবাস এবং অবসর কাটানোর জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

যারা সুন্দর পরিবেশে, কম খরচে জীবন কাটাতে চান, তাদের জন্য মন্টেনিগ্রো একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে।

**খরচ কেমন?**

মন্টেনিগ্রোতে জীবনযাত্রার খরচ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। এখানে একজন মানুষের মাসে থাকা-খাওয়া, অন্যান্য খরচসহ প্রায় ২,০০০ মার্কিন ডলারের নিচে জীবন চালানো সম্ভব।

যদিও এই খরচ জীবন ধারণের ধরনের ওপর নির্ভর করে, সাধারণভাবে এখানকার খরচ অনেক সাশ্রয়ী। এখানকার খাদ্যদ্রব্যের দামও ইতালি বা ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোর চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কম।

আপনি যদি মন্টেনিগ্রোতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিতে চান, তাহলে প্রতি মাসে প্রায় $450 (প্রায় ৫০,০০০ টাকার মতো) খরচ হতে পারে।

এছাড়া, টিভাট (Tivat) অঞ্চলের মতো জায়গাগুলোতে এক বেডরুমের ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে প্রায় ১,০০,০০০ মার্কিন ডলার (১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার মতো) খরচ হতে পারে।

**কেন যাবেন?**

মন্টেনিগ্রো শুধু একটি সুন্দর দেশই নয়, এটি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করে। এখানে উন্নত রাস্তাঘাট এবং নিয়মিত বিমান চলাচলের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ।

শীতকালে এখানকার কোলাশিন (Kolašin) এবং যাবলিয়াক (Žabljak)-এর মতো জায়গাগুলোতে স্কি করার সুযোগ রয়েছে।

এছাড়া, লোভসেন (Lovćen), ডার্মিটর (Durmitor) এবং প্রোকলেটিজে (Prokletije) জাতীয় উদ্যানে হাইকিংয়েরও (hiking) ব্যবস্থা আছে।

সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি বসবাস করলে আপনি জলক্রীড়া উপভোগ করতে পারবেন, যেমন – স্নরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং এবং প্যাডেলবোর্ডিং।

**ভিসা এবং বসবাসের নিয়মাবলী**

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য মন্টেনিগ্রোতে যেতে ভিসার প্রয়োজন হয়। তবে, সেখানে দীর্ঘ সময় থাকার জন্য আপনাকে অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি নিতে হবে।

এক্ষেত্রে, সম্পত্তি কেনা একটি ভালো উপায় হতে পারে। সম্পত্তি কিনলে আপনি অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন।

পাঁচ বছর পর আপনি স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও, আবেদন করার সময় আপনার একটি পরিষ্কার (কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই) ব্যক্তিগত ইতিহাস, জন্ম সনদ এবং স্বাস্থ্য বীমা দেখাতে হবে।

অন্যান্য গন্তব্য

যদি মন্টেনিগ্রো আপনার জন্য উপযুক্ত না হয়, তবে পানামার আজুয়েরো উপদ্বীপ, স্পেনের আটলান্টিক উপকূল অথবা পর্তুগালের উত্তরাঞ্চলও বিবেচনা করতে পারেন।

সুতরাং, যারা ইউরোপে একটি সুন্দর জীবন কাটাতে চান এবং একই সাথে খরচ কমাতে চান, তাদের জন্য মন্টেনিগ্রো একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *