সাগরে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিনিয়োগ ব্যাংক, মরগান স্ট্যানলির চেয়ারম্যান জোনাথন ব্লুমার এবং তাঁর স্ত্রী জুডি। ইতালির সিসিলি উপকূলের কাছে একটি বিলাসবহুল ইয়ট ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটে, যেখানে তাঁরা সহ আরও অনেকে ছিলেন।
এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিশ্বজুড়ে।
২০২৪ সালের আগস্ট মাসে, ১৮৩ ফুট দীর্ঘ একটি ইয়ট ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনায় জোনাথন ব্লুমার এবং তাঁর স্ত্রী জুডির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
তাঁদের সঙ্গে আরও কয়েকজন যাত্রী ছিলেন, তাঁদেরও অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে ব্লুমারের রেখে যাওয়া সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রায় ৯৫ কোটি টাকার বেশি।
মৃত জোনাথন ব্লুমারের উইল সূত্রে জানা যায়, তাঁর মৃত্যুর পর এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তাঁর সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিল। উইল অনুযায়ী, তাঁর সন্তান জেমস ব্লুমার, হেলেনা ও’ডনেল এবং এলিজাবেথ ব্লুমার এই অর্থের উত্তরাধিকারী হবেন।
উইলটি ১৯৯৬ সালে লেখা হয়েছিল। উইলে আরও উল্লেখ ছিল, যদি তাঁর স্ত্রী তাঁর আগে মারা যান, সেক্ষেত্রে সমস্ত ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ সন্তানদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করা হবে।
তবে, ব্লুমারের স্ত্রী জুডি যদি স্বামীর আগে মারা না যেতেন, তাহলে সমস্ত দায়-দেনা মিটিয়ে এই অর্থের পুরোটাই তাঁর পাওয়ার কথা ছিল। এছাড়াও, উইলে আরও উল্লেখ ছিল, জোনাথন ব্লুমারের বাবা-মা অথবা শাশুড়ি জীবিত থাকলে, তাঁরা প্রত্যেকে প্রায় ১ লক্ষ ৩৩ হাজার মার্কিন ডলার (১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার বেশি) করে পেতেন।
তাঁর সন্তানেরা যদি তাঁর আগে মারা যেতেন, তাহলে এই অর্থ তাঁর দুই ভাই এবং এক বোনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হতো।
ব্লুমার দম্পতি ছাড়াও, এই দুর্ঘটনায় ইয়টের রাঁধুনি রিকার্ডো থমাস, ব্রিটিশ টেক উদ্যোক্তা মাইক লিঞ্চ এবং তাঁর মেয়ে হান্না লিঞ্চ, নিউ ইয়র্ক সিটি-ভিত্তিক আইনজীবী ক্রিস্টোফার মরভিলো এবং তাঁর স্ত্রী নেদাও প্রাণ হারান।
ব্লুমার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের শোক প্রকাশ করে বলা হয়েছে, জোনাথন এবং জুডি অসাধারণ মানুষ ছিলেন এবং অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা ছিলেন। তাঁরা সবসময় তাঁদের পরিবারকে ভালোবাসতেন এবং নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন।
পরিবারটি আরও জানায়, তাঁরা একসঙ্গে প্রায় পাঁচ দশক কাটিয়েছেন এবং এই কঠিন সময়ে তাঁরা তাঁদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান জানানোর জন্য সকলের কাছে অনুরোধ করছেন।
জোনাথন ব্লুমার যে ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ছিলেন, সেই কোম্পানির প্রধান নির্বাহীও এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। জুডি ব্লুমার পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন এবং পরবর্তীতে মনোবিদের কাজ করতেন।
বিবিসি সূত্রে জানা যায়, জুডিকে একজন “অসাধারণ বন্ধু” হিসেবে স্মরণ করা হচ্ছে। তিনি একটি ক্যান্সার গবেষণা বিষয়ক দাতব্য সংস্থার ট্রাস্টি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল