শতবর্ষে প্রথম: প্রেসিডেন্ট ছাড়াই চার্চের সম্মেলন, শোকের ছায়া!

**মর্মন চার্চের বার্ষিক সম্মেলনে নেতৃত্বের পরিবর্তন ও শোকের ছায়া**

যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য চার্চ অফ জিসাস ক্রাইস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেন্টস’ (যা সাধারণত মর্মন চার্চ নামে পরিচিত) তাদের বছরে দু’বার অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন চার্চটি তাদের দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট, রাসেল এম. নেলসনের মৃত্যুতে শোকাহত।

এছাড়াও, সম্প্রতি মিশিগানে তাদের একটি চার্চে সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকজন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

সাধারণত, এই ধরনের সম্মেলনে চার্চের প্রধান ধর্মগুরু গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন এবং নতুন নীতি ও কার্যক্রম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নেলসনের মৃত্যুর কারণে এবারের সম্মেলনটি ভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, নেলসনের স্থলাভিষিক্ত হবেন ড্যালিন এইচ. ওকস। তিনি বর্তমানে কোরাম অফ দ্য টুয়েলভ অ্যাপোস্টলস নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

চার্চের নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নেলসনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরেই নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

ঐতিহ্যগতভাবে, মর্মন চার্চে প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতিতে কোরাম অফ দ্য টুয়েলভ অ্যাপোস্টলস-এর সদস্যরা চার্চ পরিচালনা করে থাকেন। ১৮৪৪ সালে চার্চের প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ স্মিথের মৃত্যুর পর এবং পরবর্তীতে ১৮৭৭ সালে ব্রিগহাম ইয়ং এবং ১৮৮৭ সালে জন টেলরের মৃত্যুর পরও এই রীতি অনুসরণ করা হয়েছিল।

এই কোরাম বর্তমানে সারা বিশ্বে চার্চের ১ কোটি ৭০ লক্ষাধিক সদস্যের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।

এই সম্মেলনের কেন্দ্রস্থল হলো যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের সল্ট লেক সিটি। এখানে প্রায় ১ লক্ষ সদস্য সরাসরি সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরও অনেকে অনলাইনে যুক্ত হবেন।

সম্মেলনের মূল আকর্ষণ হলো ধর্মীয় আলোচনা ও প্রার্থনা, যা সদস্যদের মধ্যে একতা ও ভালোবাসার বন্ধন আরও দৃঢ় করে।

তবে, সম্মেলনের প্রাক্কালে মিশিগানের গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক টাউনশিপে চার্চের ওপর হওয়া সন্ত্রাসী হামলায় চার্চ সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

গত সপ্তাহে এক বন্দুকধারী একটি পিকআপ ট্রাক নিয়ে চার্চে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে কয়েকজন সদস্য নিহত হন।

পুলিশের গুলিতে হামলাকারীও নিহত হয়। এই ঘটনার জেরে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে।

ড্যালিন এইচ. ওকস দীর্ঘদিন ধরে চার্চের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি এর আগে ইউটাহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন।

তিনি বিভিন্ন সময়ে সমকামিতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন।

অনেকেই ধারণা করছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ওকস এবার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।

মর্মন চার্চের এই সম্মেলনটি তাদের সদস্যদের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিশ্বজুড়ে এর অনুসারীদের জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

এই সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের আগমন এবং শোকের আবহ একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *