শিরোনাম: আমেরিকার একটি শহরে বাড়ির দাম সবচেয়ে সস্তা, বাংলাদেশের জন্য কি কোনো শিক্ষা আছে?
বর্তমানে সারা বিশ্বে বাড়ি কেনার খরচ বাড়ছে, উন্নত দেশগুলোতেও এর ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি, একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ফ্লিন্ট শহরে বাড়ি কেনা সবচেয়ে সাশ্রয়ী।
এই শহরের জীবনযাত্রার খরচও তুলনামূলকভাবে কম। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য শহরগুলোর তুলনায় এখানে বাড়ির দাম এবং বাসিন্দাদের আয়ের মধ্যে সমন্বয় বেশ ভালো।
ওয়াললেটহাব নামক একটি প্রতিষ্ঠানের করা সমীক্ষায় জানা যায়, ফ্লিন্টে বাড়ির বর্গফুট প্রতি গড় দাম মাত্র ৬১ মার্কিন ডলার। এছাড়া, বাড়ি ভাড়ার তুলনায় কেনার প্রবণতা এখানে বেশি, যা শহরটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
গবেষণাটি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে, যেমন – বাড়ির দাম, জীবনযাত্রার খরচ, বর্গফুট প্রতি গড় খরচ, বীমার খরচ এবং ট্যাক্স ইত্যাদি।
ফ্লিন্টের এই সাশ্রয়ী মূল্যের পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে সেখানকার ঐতিহাসিক জল সংকট। তবে বর্তমানে সেখানকার পানির মান উন্নত হয়েছে এবং পরিবেশ সুরক্ষার নিয়মকানুনও কঠোরভাবে মানা হচ্ছে।
স্থানীয় মেয়র জানিয়েছেন, তারা নতুন অবকাঠামো তৈরি করেছেন এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, যা বাসিন্দাদের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
এই তালিকায় ফ্লিন্টের পরেই রয়েছে ডেট্রয়েট শহর। ডেট্রয়েটে বাড়ির গড় দাম সেখানকার মানুষের গড় আয়ের দ্বিগুণের সামান্য বেশি।
এখানে প্রতি বর্গফুটের গড় দাম ৮৭ ডলার। ডেট্রয়েটে অনেক বাড়ি খালি পড়ে আছে, কারণ অতীতে এখানকার অনেক মানুষ আর্থিক সংকটের কারণে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
ফলে বর্তমানে এখানে ক্রেতাদের বাজার সৃষ্টি হয়েছে।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে পেনসিলভেনিয়ার পিটসবার্গ শহর। এখানেও বাড়ি কেনার খরচ ভাড়ার চেয়ে তুলনামূলকভাবে লাভজনক।
পিটসবার্গে বাড়ির দাম সেখানকার মানুষের গড় আয়ের প্রায় ৩.৮ গুণ।
ওয়াললেটহাবের একজন বিশ্লেষক বলেছেন, বাড়ি কেনার স্থান নির্বাচন করার সময় শুধু দামের দিকে তাকালে চলে না। ওই এলাকার মানুষের গড় আয়, জীবনযাত্রার খরচ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ট্যাক্সের মতো বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই গবেষণা থেকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, একটি বাড়ির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুধু বাজারের প্রচলিত দামের দিকে না তাকিয়ে জীবনযাত্রার অন্যান্য খরচগুলোও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।
এছাড়া, সরকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উচিত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, যা ফ্লিন্টের মতো শহরের উদাহরণ থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার