মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাসিন্দাদের স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় শহরগুলো
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন একটি চলমান প্রক্রিয়া, যেখানে মানুষজন নতুন সুযোগের সন্ধানে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পাড়ি জমায়। সম্প্রতি, একটি অনলাইন স্থানান্তরণ মার্কেটপ্লেস, ‘মেকমাইমুভ’ (MakeMyMove) এমন কিছু শহরের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে নতুন আসা মানুষেরা সহজেই নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।
তাদের মতে, এই শহরগুলো শুধু নতুন বাসিন্দাদের আকর্ষণই করে না, বরং তাদের ভালোভাবে গ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন উদ্ভাবনী কৌশলও অবলম্বন করে।
তালিকায় শীর্ষ স্থানটি অর্জন করেছে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের কলম্বাস শহর। শহরটি কৌশলগতভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছে, যার লক্ষ্য ২০২৬ সাল নাগাদ জনসংখ্যার ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা।
মেকমাইমুভের অনুসন্ধানে জানা যায়, কলম্বাস দীর্ঘমেয়াদে বসবাস করতে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের সুযোগ তৈরি করে দেয়। শুধু তাই নয়, তারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তাদের সংযোগ স্থাপন করে এবং সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সুযোগের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, যাতে নতুন আসা মানুষেরা সেখানে স্থায়ীভাবে থাকতে আগ্রহী হয়।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় কেন্টাকি রাজ্য। এখানকার মানুষের আতিথেয়তা এবং আন্তরিকতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নতুন আগন্তুকদের তারা সবসময় সাদরে গ্রহণ করে।
কেউ কেউ তাদের জন্য খাবার রান্না করে, স্থানান্তরিত হতে সাহায্য করে অথবা শহরের আশেপাশে ঘুরতেও নিয়ে যায়।
ইনডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নোভেলভিলে শহরটি এই তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। শহরটি নতুন আসা বাসিন্দাদের জন্য একটি “কনসিয়ার্জ-লেভেল” কমিউনিটি ইন্টিগ্রেশন তৈরি করে।
এর অর্থ হলো, শহরের কর্তৃপক্ষ নতুন আসা মানুষদের শুরু থেকেই সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে অনুভব করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
মেকমাইমুভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ইভান হকের মতে, এই শহরগুলো বুঝতে পেরেছে যে স্থানান্তরিত হওয়া মানে কেবল বাক্সবন্দী জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া নয়, বরং একটি নতুন জীবন তৈরি করা।
তিনি আরও বলেন, “এই শহরগুলোর নেতারা মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে, নতুনদের জন্য বাধাগুলো দূর করে এবং প্রমাণ করে যে একটি স্বাগত-পূর্ণ সম্প্রদায়ই হলো সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।”
এই শহরগুলো তাদের স্থানীয় উন্নয়নে নতুন বাসিন্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, কলম্বাস ২০২৫ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা সমৃদ্ধি বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের চেষ্টা করছে।
এছাড়াও, অ্যাপালাচিয়ান অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ‘শেপিং আওয়ার অ্যাপালাচিয়ান রিজিওন’ (SOAR) প্রোগ্রাম গ্রহণ করা হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো পূর্বাঞ্চলীয় কেন্টাকির জনসংখ্যা ধরে রাখা এবং বৃদ্ধি করা।
যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের এই প্রবণতা সেখানকার শহরগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ধরনের উদ্ভাবনী কৌশলগুলো শহরগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে এবং স্থানীয় উন্নয়নে সহায়তা করছে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার