মারা যাওয়া মেয়ের সম্মান, মায়ের চোখে অশ্রু!

টেক্সাসের এক শোকাহত মা, তাঁর প্রয়াত মেয়ের সম্মানে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন। মেয়ের অকাল প্রয়াণের পর, মেয়ের উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ গ্রহণ করলেন তিনি। হৃদয়বিদারক হলেও, এই ঘটনা মা ও মেয়ের অটুট ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ওয়াকো শহরে। স্থানীয় ইউনিভার্সিটি হাই স্কুলে গত শুক্রবার, ২৩শে মে, এই শোকের আবহ তৈরি হয়। প্রয়াত তরুণীর মা, রোশাউন্দা কার, তাঁর মেয়ে জাকালা গার্ডনার কারের হয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অক্টোবর মাসে মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে জাকার মৃত্যু হয়।

অনুষ্ঠানে কান্নায় ভেঙে পড়া এই মায়ের চোখে ছিল একদিকে শোক, অন্যদিকে মেয়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা। মেয়ের সম্মানার্থে তিনি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে গাউন পরেছিলেন। খবর অনুযায়ী, জাকার মা বলেন, “আজকের দিনটা অনেক অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। জাকালা তার ভাই-বোনদের মধ্যে প্রথম, যে গ্র্যাজুয়েট হলো, তাই এই অনুষ্ঠানে অনেক আবেগ কাজ করছে।”

জাকার মা আরও জানান, মেয়েকে নিয়ে তিনি খুব গর্বিত। হয়তো মেয়েটি আশেপাশে কোথাও দাঁড়িয়ে হাসিখুশি নৃত্য করছে, এমনটাই তিনি অনুভব করেন। মেয়ের কথা বলতে গিয়ে বারবার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি সবসময় তাকে এখানে দেখতে চাইতাম। একটা দিনও যায় না, যখন তাকে অনুভব করি না, এটা সত্যিই খুব কষ্টের।”

জানা যায়, জাকার মৃত্যুর দিন সকালে, মা তাকে ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে টেক্সট করেছিলেন। সেই দিনটা ছিল ৬ই অক্টোবর। মা জানান, তিনি যখন মেয়ের ঘরে যান, তখনই জানতে পারেন, ঘুমের মধ্যে খিঁচুনি হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

এই ঘটনার পর, রোশাউন্দা তাঁর মেয়ের নামে একটি অলাভজনক সংস্থা (nonprofit organization) তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন। সংস্থাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কাইলার প্লেস ১৯’। এই সংস্থার মাধ্যমে মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাউন্সেলিং এবং চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। রোশাউন্দা জানান, তিনি চান এমন একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করতে, যেখানে রোগীরা তাঁদের অসুস্থতা ভুলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও স্বস্তি অনুভব করতে পারে।

জাকার মা চান, তাঁর মেয়ের স্মৃতি সবসময় মানুষের মনে থাকুক। একইসঙ্গে, মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে যারা একাকীত্বে ভোগেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো যায়। এই মহৎ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজে আলো ছড়াবে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *