মা ও ছেলের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন: বড়দিনের ছুটিতে বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে মতবিরোধ।
মা-বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের সবাই একসাথে বড়দিন কাটানোর যে রীতি তৈরি হয়েছিল, তা এবার ভাঙতে চলেছে। মা-এর বড়দিনের ছুটিতে ভিয়েতনাম যাওয়ার সিদ্ধান্তে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে পরিবার।
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের (UK) এক নারীর ভিয়েতনামে বড়দিনের ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা নিয়ে তার ছেলে ও মেয়ের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে। মা মার্গারেট, যিনি ৬৮ বছর বয়সী, তার সঙ্গী মাইকের সঙ্গে বড়দিনের ছুটিতে ভিয়েতনাম যেতে চান।
কিন্তু তার এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন ছেলে পল (২৮) এবং মেয়ে ক্রিস্টিন (৩২)।
পলের মতে, তাদের মা-কে তিনি ভালোবাসেন এবং মাইকের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়েও তাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বড়দিনের মতো একটি সময়ে, যখন তারা সবসময় একসঙ্গে কাটান, মাকে না জানিয়ে ভিয়েতনাম যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা তাদের ভালো লাগেনি।
২০১৬ সালে তাদের বাবার মৃত্যুর পর থেকে তারা সবসময় বড়দিন একসাথে উদযাপন করেছেন। এই সময়ে পরিবারের সবাই একত্রিত হয়ে বাবাকে স্মরণ করেন।
পলের অভিযোগ, মা তাদের অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল নন। তাদের পরিবারের ঐতিহ্য হঠাৎ করে পরিবর্তন হয়ে গেলে কেমন লাগে, সেটা তিনি বুঝতে চান না।
এই ঐতিহ্যগুলো তাদের বাবাকে হারানোর শোকের পর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে মানসিক শান্তি দিত। তাদের এই বিষয়ে আগে জানালে ভালো হতো। পল আরও বলেন, বন্ধুদেরও তাদের পরিবারের সঙ্গে বড়দিন কাটাতে দেখা যায়।
অন্যদিকে, মার্গারেটের বক্তব্য হলো, তিনি এখন অবসর জীবন উপভোগ করছেন এবং বিশ্ব ভ্রমণে আগ্রহী। তার সন্তানরা যখন তাদের কৈশোরে অনেক ভ্রমণ করেছে, তখন তিনি সংসারের দায়িত্বের কারণে সেই সুযোগ পাননি।
এখন তিনি সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে চান। তিনি মনে করেন, নিজের জীবন উপভোগ করার জন্য সন্তানদের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
মার্গারেট আরও জানান, তার সন্তানরা তাদের বাবার মৃত্যুর পর থেকে সবসময় তাদের পাশে ছিল। তিনি তাদের ভালোবাসেন এবং তাদের ভালো চান।
তিনি চান, তারা যেন তার এই সিদ্ধান্তে কষ্ট না পায়। তিনি মনে করেন, তার সন্তানরা এখনো ছোট বাচ্চার মতো আচরণ করছে।
এই ঘটনার পর, অনেক পাঠক তাদের মতামত জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, মার্গারেটের উচিত ছিল সন্তানদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।
আবার কেউ বলছেন, মার্গারেটের নিজের জীবন উপভোগ করার অধিকার আছে।
সবশেষে, এই ঘটনা আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মধ্যেকার ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়। সন্তানেরা তাদের মায়ের সিদ্ধান্তে কতটা হস্তক্ষেপ করতে পারে, সেই বিষয়ে সমাজে বিভিন্ন মত থাকতে পারে।
তবে, পরিবারের শান্তি বজায় রাখতে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আলোচনার বিকল্প নেই।
তথ্য সূত্র: The Guardian