শিরোনাম: মায়ের স্মৃতি: বই প্রকাশের আগে মাকে হারানো লেখকের প্রতি বন্ধুদের ভালোবাসার উদযাপন
জীবন সবসময় আমাদের জন্য অপ্রত্যাশিত মোড় নিয়ে আসে, আর প্রিয়জন হারানোর কষ্ট সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি হৃদয়স্পর্শী ঘটনা তেমনই এক গভীর শোক আর ভালোবাসার গল্প নিয়ে এসেছে।
লেখক মলি মাকাডোর মা, প্যান-এর প্রয়াণের পর, তাঁর বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে মায়ের বন্ধু-বান্ধবীরা এক বিশেষ সারপ্রাইজ দিয়ে শোকের সময়ে মলির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
মলি মাকাডোর মা, প্যান ছিলেন তাঁর সবচেয়ে কাছের বন্ধু এবং অনুপ্রেরণা। মলির লেখালিখির প্রতি প্যানের উৎসাহ ছিল সবসময়।
ছোটবেলা থেকেই মলি যখন লেখালেখি শুরু করেন, মা হিসেবে তিনি মেয়ের এই প্রতিভাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করতেন। মলি জানিয়েছেন, তাঁর মা সবসময় বলতেন, “লেখাটা তোর একটা বিশেষ ক্ষমতা, যা সবার থাকে না।
মেয়ের কোনো কষ্ট হলে, মা তাঁকে সেই বিষয়ে লিখতে উৎসাহিত করতেন।
মলি যখন তাঁর প্রথম বই “অ্যান ইন্ডিয়ান-ইশ প্রপোজাল” লেখার কাজ শুরু করেন, তখনও তিনি জানতেন না তাঁর জীবনে আরও কত কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।
বইটির পাণ্ডুলিপি তৈরি হওয়ার এক বছর আগে তাঁর মা আলঝাইমার্স নামক স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হন।
মায়ের অসুস্থতা এবং নিজের ব্যক্তিগত জীবনের নানা ব্যস্ততার মাঝেও মলি তাঁর বইটি শেষ করেন।
বইটি মূলত তাঁর জীবনের একটি সত্য ঘটনার প্রেক্ষাপটে লেখা, যেখানে তিনি তাঁর ভারতীয় স্বামীর সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার গল্প ফুটিয়ে তুলেছেন।
বইটিতে মায়ের চরিত্রটিও বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে।
বইটি প্রকাশের ১০ মাস আগে, ৭৪ বছর বয়সে প্যানের প্রয়াণ হয়।
বইটি যখন প্রকাশিত হয়, তখন মলি তাঁর মাকে জানাতে পারেননি, তবে তিনি সবসময় বিশ্বাস করতেন, মা তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত হতেন।
মায়ের মৃত্যুর পর, মলির জীবনে এক গভীর শূন্যতা তৈরি হয়।
সেই সময়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান মায়ের বন্ধু-বান্ধবীরা।
প্যানের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একটি দল, যারা বহু বছর ধরে একসঙ্গে একটি বইয়ের ক্লাব চালাতেন, তাঁরা মলিকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য একত্রিত হন।
মলির বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে তাঁরা উপস্থিত হয়ে, লেখককে শুভেচ্ছা জানান এবং বইটির একটি বিশেষ কপি কেনেন।
এই অপ্রত্যাশিত ভালোবাসায় মলি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
মায়ের বন্ধুদের এই ভালোবাসার মুহূর্তটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, অনেকেই তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানান।
তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন মা-হারা, আবার কারো মা অসুস্থ।
তাঁরা তাঁদের মায়ের বন্ধুদের পাশে থাকার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন।
মলি জানান, তাঁর মা সবসময় অন্যদের পাশে দাঁড়াতে শিখিয়েছিলেন।
কারো দুঃখে, কষ্টে পাশে থাকাটা যে কতটা জরুরি, তা তিনি এই ঘটনার মাধ্যমে আরও একবার উপলব্ধি করেছেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে, লেখকের জীবনে শোকের সময়ে বন্ধু এবং পরিবারের গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে।
এটি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রিয়জন হারানোর পরেও কীভাবে তাঁদের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা যায়।
তথ্য সূত্র: পিপল