মা হওয়ার পরেই শাশুড়ির সঙ্গে সম্পর্ক? ভয়ঙ্কর ঘটনা!

নতুন মা-কে নিয়ে শাশুড়ির আপত্তি: আধুনিক যুগে সম্পর্কের টানাপোড়েন?

বর্তমানে বাংলাদেশে যৌথ পরিবার থেকে বেরিয়ে এসে একক পরিবারে বসবাসের প্রবণতা বাড়ছে, যেখানে নতুন মায়েদের উপর সন্তান লালন-পালনের চাপ অনেক বেশি। চারপাশে যখন আধুনিকতার ছোঁয়া, তখন পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের পুরোনো ধ্যান-ধারণার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানসিকতার একটা ফারাক তৈরি হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে এক নতুন মা তাঁর শাশুড়ির সঙ্গে মনোমালিন্যে জড়িয়ে পড়েছেন, কারণ তাঁর সন্তানের প্রতিপালন নিয়ে শাশুড়ির কিছু প্রশ্ন রয়েছে।

ঢাকার কাছাকাছি বসবাস করা ২৬ বছর বয়সী ওই নারীর প্রথম সন্তান হয়েছে সম্প্রতি। বিয়ের আগে শাশুড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল।

কিন্তু সন্তানের জন্মের পর থেকেই সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। ওই নারীর অভিযোগ, তাঁর শাশুড়ি সন্তানের স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন এবং তাঁর সিদ্ধান্তগুলোর সমালোচনা করছেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন ওই নারী তাঁর বুকের দুধ ফ্রিজে রেখেছিলেন। শাশুড়ি এর কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, বেশি দুধ হওয়ার কারণে তা সংরক্ষণের জন্য ঠাণ্ডা করা জরুরি।

এরপর যখন তিনি শিশুকে ঠাণ্ডা দুধ খাওয়ানো শুরু করেন, তখনও শাশুড়ি অবাক হয়ে জানতে চান, কেন শিশুকে গরম দুধ খাওয়ানো হচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মায়ের শরীর থেকে দুধ বের হওয়ার সময় গরম থাকে।

বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। কয়েক দিন পর শাশুড়ি, ছেলের কাছে ফোন করে জানতে চান, ঠাণ্ডা দুধ খাওয়ানো কি শিশুর জন্য ঠিক আছে? মা জানিয়েছেন, তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই সন্তানের জন্য বুকের দুধের বোতল প্রস্তুত করেন।

এমনকি ঠান্ডা দুধ খাওয়ানো নিয়েও তিনি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছেন।

শুধু দুধের তাপমাত্রাই নয়, শিশুর খাওয়ার সময় শব্দ করা নিয়েও আপত্তি তোলেন শাশুড়ি। মা জানান, শিশুটি জোরে খায়, এতে ভয়ের কিছু নেই।

কিন্তু শাশুড়ি এতেও সন্দেহ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি এতটাই উদ্বিগ্ন হন যে, ছেলের কাছে জানতে চান, সত্যিই এমনটা হওয়া স্বাভাবিক কিনা।

এই ঘটনার পর ওই নারী মনে করছেন, শাশুড়ির এমন আচরণ তাঁর প্রতি অনাস্থার পরিচয়। তিনি জানান, হয়তো তিনি নতুন মা, তবে সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা করেন।

তিনি জানতে চান, তাঁর এই অনুভূতি স্বাভাবিক কিনা, নাকি তিনি বেশি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এই নারীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, নতুন মায়ের প্রতি শাশুড়ির এমন আচরণ সম্মানজনক নয়।

তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে নতুন মায়ের নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মা ও শাশুড়ির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং আধুনিক মানসিকতার সমন্বয় খুবই জরুরি।

প্রজন্মের এই ফারাক দূর করতে আলোচনার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি কমানো যেতে পারে। এতে করে একটি শিশুর বেড়ে ওঠার পরিবেশ আরও সুন্দর ও আনন্দময় হতে পারে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *