জাপানের অন্যতম পরিচিত স্থান, ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় – মাউন্ট ফুজি। কিন্তু অতিরিক্ত পর্যটকদের আনাগোনায় এই স্থানটিতে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।
পাহাড়টিতে আবর্জনার পরিমাণ বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এই কারণে, ২০২৫ সাল থেকে ফুজি পর্বতে আরোহণকারীদের জন্য নতুন কিছু নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে শিযুওকা এবং ইয়ামানাসি প্রিফেকচার।
এই দুটি প্রিফেকচারের অংশীদারিত্বেই মাউন্ট ফুজি অবস্থিত।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পর্বত আরোহণের জন্য প্রত্যেককে ৪,০০০ ইয়েন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩,৫০০ টাকা) ফি দিতে হবে। এছাড়াও, অনলাইনে আগে থেকে সময় বুকিং করতে হবে, কারণ প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪,০০০ জন আরোহীকে পাহাড়টিতে আরোহণের অনুমতি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে, অর্থাৎ ২০২৪ সালে, পর্যটকদের কাছ থেকে ঐচ্ছিকভাবে ১,০০০ ইয়েন (প্রায় ৮৭৫ টাকা) দেওয়ার আবেদন করা হতো।
ইয়ামানাসি প্রিফেকচারের গভর্নর কোতারো নাগাসাকি গত বছর বলেছিলেন, “মাউন্ট ফুজির আরোহণের জন্য আমরা নিরাপত্তা বিষয়ক ব্যবস্থা জোরদার করছি, যাতে বিশ্বের এই অমূল্য সম্পদটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুরক্ষিত থাকে।”
পাহাড়ে অতিরিক্ত মানুষের আনাগোনা শুধু একটি সমস্যা নয়। অনেক আরোহী উপযুক্ত সরঞ্জাম, যেমন – স্যান্ডেল বা ফ্লিপ-ফ্লপ পরে আসায় অথবা পর্যাপ্ত জল সঙ্গে না নেওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এই বিষয়টি মাথায় রেখে, শিযুওকা প্রিফেকচার, যেখান থেকে ফুজি পর্বতের তিনটি পথ শুরু হয়েছে, আরোহীদের জন্য একটি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে।
এর মাধ্যমে আরোহীরা পর্বতারোহণের নিয়মকানুন সম্পর্কে অবগত হতে পারবে।
এছাড়াও, পর্বত আরোহণের সময়সীমা নিয়েও নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে যারা পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত বিশ্রামাগারগুলোতে রাত্রিযাপন করবেন না, তাদের জন্য প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত আরোহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জাপানের অন্যান্য অনেক পর্যটন কেন্দ্রও অতিরিক্ত পর্যটকদের আগমনকে একটি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তারা এই সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, হিরোশিমার “ভাসমান তোরি গেট” নামে পরিচিত ইৎসুুকুশিমা শ্রাইনে ২০২৩ সাল থেকে প্রবেশ ফি চালু করা হয়েছে, যা ছবি তোলার জন্য জনপ্রিয় একটি স্থান।
এছাড়াও, ওতারু শহরের তুষারাবৃত অঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় সামলাতে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে।
পর্যটকদের আনাগোনা এবং এর ব্যবস্থাপনার সমস্যা শুধুমাত্র জাপানেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানেই পর্যটকদের কারণে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন