প্রিয় ভিজে আনন্দা লুইসের জীবনাবসান: শোকস্তব্ধ ভক্তরা

এক সময়ের জনপ্রিয় এমটিভি’র ভিজে (ভিডিও জকি) আনন্দা লুইস আর নেই। ৫২ বছর বয়সে স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বোন লক্ষ্মী এমরি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

নব্বইয়ের দশকে সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে পরিচিত মুখ ছিলেন আনন্দা। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে অনুরাগী মহলে।

আনন্দা লুইস ছিলেন একাধারে টেলিভিশন উপস্থাপক এবং অভিনেত্রী। তিনি এমটিভি’র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজ করেছেন, যার মধ্যে ‘এমটিভি লাইভ’, ‘টোটাল রিকোয়েস্ট লাইভ’ ও ‘হট জোন’-এর মতো জনপ্রিয় অনুষ্ঠানগুলো উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও, তিনি ‘দ্য আনন্দা লুইস শো’-এর মতো নিজস্ব টক শো’ও করেছেন।

আনন্দা লুইসের ক্যান্সার শনাক্ত হয় ২০২০ সালে, তৃতীয় স্তরে। এরপর তিনি তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন এবং স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করেছেন।

নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি নিয়মিত ম্যামোগ্রাম করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিতেন। তাঁর কথায়, “স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণ জীবন বাঁচাতে পারে।”

গত বছর অক্টোবর মাসে তিনি জানান, তাঁর ক্যান্সার চতুর্থ স্তরে পৌঁছেছে।

সংগীত এবং বিনোদন জগতের বাইরেও, আনন্দা লুইসের ছিল সামাজিক দায়বদ্ধতা। তিনি ‘ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’ (ওয়াইএলডিআই)-এর হয়ে কাজ করেছেন, যেখানে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করতেন।

এই অভিজ্ঞতা তাঁকে ‘টিন সামিট’ নামক একটি অনুষ্ঠানে কাজ করতে উৎসাহিত করে, যেখানে তিনি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতেন। এই অনুষ্ঠানে বাস্কেটবল কিংবদন্তী কোবি ব্রায়ান্ট থেকে শুরু করে হিলারি ক্লিনটনের মতো ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁর।

আনন্দা লুইস তাঁর কর্মজীবনে সবসময় ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রেখেছেন। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করার সময় তিনি জীবনের আনন্দ খুঁজে ফিরেছেন।

তিনি বলেছিলেন, “ক্যান্সার আমাকে জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে, যা হয়তো অন্য সময় আমি আনতাম না। এই পরিবর্তনগুলো আমাকে আরও বেশি আনন্দ এনে দিয়েছে।”

স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশেও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

তাই, এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি।

আনন্দা লুইসের প্রয়াণে শুধু বিনোদন জগত নয়, বরং স্তন ক্যান্সার সচেতনতা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও একটি শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর কাজ চিরকাল মানুষের মনে গেঁথে থাকবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *