মুখ টেপিং: ৫ রাতের পরীক্ষায় যা ঘটল!

মুখ বন্ধ করে ঘুমের নতুন ধারা: স্বাস্থ্য সচেতনতায় কতটা যুক্তিযুক্ত?

সম্প্রতি একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মুখ বন্ধ করে ঘুমের একটি নতুন পদ্ধতির কথা জানা গেছে। মুখ বন্ধ করে ঘুমানো বা ‘মাউথ টেপিং’ হলো ঘুমের সময় টেপ দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা, যা নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে উৎসাহিত করে।

পশ্চিমা বিশ্বে এটি বেশ পরিচিতি লাভ করেছে, তবে আমাদের দেশে এই ধারণাটি এখনো খুব একটা প্রচলিত নয়। দাঁতের স্বাস্থ্য এবং ঘুমের গুণগত মান উন্নত করার উদ্দেশ্যে অনেকে এখন এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করতে চাইছেন।

আসলে, মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া শরীরের জন্য বেশ কিছু সমস্যা তৈরি করতে পারে। এর ফলে দাঁতের ক্ষয়, দাঁত কিড়মিড় করা (bruxism), এবং ঘুমের সময় শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে।

এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে এবং নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে মুখ বন্ধ করে ঘুমানোর ধারণাটি এসেছে।

প্রতিবেদনে এক জন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির পাঁচ দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ডেন্টাল হাইজিনিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী, দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তিনি এই পদ্ধতিটি চেষ্টা করেন।

বাজারে মুখ বন্ধ করার জন্য বিশেষ টেপ পাওয়া যায়, যা ঘুমের সময় মুখের উপর লাগিয়ে রাখতে হয়। তবে, তার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর ছিল না।

টেপ লাগানোর পর তিনি রাতে ঘুমাতে পারলেও, সকালে ঘুম থেকে উঠে টেপ খুঁজে পাননি।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার নাকের কিছু সমস্যা রয়েছে। তার নাকের হাড় বাঁকা (deviated septum) এবং অ্যালার্জির কারণে প্রায়ই নাক বন্ধ থাকে।

ফলে, নাক দিয়ে শ্বাস নিতে তার সমস্যা হয়। এই কারণে তিনি মুখ বন্ধ করে ঘুমানোর পদ্ধতিটি চালিয়ে যেতে পারেননি।

মুখ বন্ধ করে ঘুমানোর উপকারিতা নিয়ে এখনো তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। তবে, একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, হালকা ঘুমের সমস্যা (mild obstructive sleep apnea) আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কিছুটা উপকারী হতে পারে।

মুখ বন্ধ করে ঘুমানো নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে, যা ঘুমের সময় শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতে পারে এবং ঘুমের গুণগত মান উন্নত করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখ বন্ধ করে ঘুমানোর কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। যাদের শ্বাসকষ্ট বা ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি ক্ষতিকর হতে পারে। এছাড়া, টেপ ব্যবহারের কারণে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে।

যদি আপনিও এই পদ্ধতিটি চেষ্টা করতে চান, তবে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে, যাদের শ্বাসকষ্ট বা ঘুমের সমস্যা আছে, তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত নয়।

স্বাস্থ্য বিষয়ক নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সবসময় বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া জরুরি।

পরিশেষে, মুখ বন্ধ করে ঘুমানো একটি নতুন ধারণা হতে পারে, তবে এর উপকারিতা এবং ঝুঁকি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে এটি একটি উপায় হতে পারে, তবে সবার জন্য এটি উপযুক্ত নাও হতে পারে।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *