ভারতে বর্ষা ঋতু সাধারণত জুন মাসে শুরু হলেও, এবার মুম্বাই শহরে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার থেকে এই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে বর্ষার আগমন।
ভারতের এই বাণিজ্যিক রাজধানী শহরে অপ্রত্যাশিতভাবে বর্ষা আসায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা থেকে কিছুটা স্বস্তি মিললেও, শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যা সেখানকার মানুষের জন্য দুর্ভোগ ডেকে এনেছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) মুম্বাই শহরে ‘অত্যধিক বৃষ্টিপাতের’ পূর্বাভাস দিয়েছে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার পর্যন্ত ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। শহরবাসীকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “সকল নাগরিককে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”
আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, সাধারণত ১১ই জুনের আশেপাশে বর্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, এবার ১৬ দিন আগেই বর্ষা এসেছে। এর আগে, ২০০১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এত দ্রুত বর্ষা আসেনি।
মহারাষ্ট্রের আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান শুভাঙ্গী ভুতে নিশ্চিত করেছেন যে, গত ১৪ বছরে এবারই সবচেয়ে আগে বর্ষা এসেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিগত বছরগুলোতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্ষা ঋতুর ওপর এর কেমন প্রভাব পড়বে।
বর্ষা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই সময়ে অঞ্চলের মোট বার্ষিক বৃষ্টিপাতের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বৃষ্টি হয়।
এই সময়ে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা ভারতীয় উপমহাদেশে তাপ বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে বাতাস উপরে উঠে যায় এবং ভারত মহাসাগর থেকে আসা শীতল বায়ু প্রচুর বৃষ্টি নিয়ে আসে।
বর্ষা ভারতের কৃষিখাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা কোটি কোটি কৃষকের জীবন ধারণের সঙ্গে জড়িত। তবে বর্ষা একদিকে যেমন আশীর্বাদ, তেমনি এর প্রভাবে ভূমিধস ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও দেখা যায়।
বাংলাদেশের মতো, ভারতেই কৃষিকাজ বর্ষাকালের ওপর নির্ভরশীল। বর্ষার সময় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও তীব্রতা বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা